সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করে বিক্ষোভ দমনে বন্দুকের আশ্রয় নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে সামরিক বুটের চাপেও জনতার জয়গান কিছুতেই থামছে না। এহেন পরিস্থিতিতে একে একে বিরোধী নেতাদের নিশানা করছে ‘সর্বশক্তিমান’ সামরিক জুন্টা। বিক্ষোভ দমন করতে সেনাশাসকরা যে মরিয়া সেই কথা প্রমাণ করে রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে অপহরণ করা হয় গণতন্ত্রকামী ও সেনাবিরোধী নেতা ওয়াই মোয়ে নাইংকে।
[আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মাঝে নাগরিকদের পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ দিল ফরাসি দূতাবাস]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মোটরবাইক মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য সমর্থকদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন নাইং। তখনই তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে ‘পুলিশে’র একটি গাড়ি। তার পরে কোনও অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাইংকে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে জুন্টার অন্যতম বিরোধী মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন এই মুসলিম যুবক। তাঁর গ্রেপ্তারিতে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন বড়সড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষত, মোনিওয়া শহরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা লাগাতার বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন নাইং-ই। তবে তাঁর গ্রেপ্তারি নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি সেনার কোনও মুখপাত্র। নাইংয়ের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের দাবি, তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানেন না তাঁরা। পুলিশ বা সেনাবাহিনীর তরফে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কোনও ঘোষণাও করা হয়নি। নাইংকে কার্যত অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে গোপন ডেরায় আটকে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে মায়ানমারের রাশ নিজেদের হাতে নেয় সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় কাউন্সিলর আং সান সু কি-সহ নির্বাচিত সরকারের শীর্ষ কর্তাদের। তারপর থেকেই সে দেশে গণতন্ত্রের দাবিতে চলছে তুমুল বিক্ষোভ। পালটা অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। এপর্যন্ত ফৌজের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬০০জন গণতন্ত্রকামী। এদিকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।বিশেষ করে গত শনিবারের পর থেকেই। ওই দিন শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছিল জুন্টা। তারপর থেকেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে।