সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তবন্যা বইছে মায়ানমারে (Myanmar)। গণতন্ত্রকে মূল থেকে উপড়ে ফেলতে নির্বিচারে হত্যালীলা চালাচ্ছে জুন্টা। এবার তাদের বন্দুকের নলের নিশানায় হাজার হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী। বৃহস্পতিবার মান্দালয়ে চিকিৎসকদের উপর হামলা চালাল সেনাবাহিনী। তাঁদের অপরাধটা কী? গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন তাঁরা। তাঁদের সেই প্রতিবাদী কণ্ঠকে ঢাকতেই আবার গর্জে উঠল জুন্টার অত্যাধুনিক রাইফেল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সেনাবাহিনীর অতর্কিত হামলায় ইতিমধ্যে ১০-১৫ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জখম বহু। যদিও এ প্রসঙ্গে জুন্টার মুখপাত্রের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে সেনার গুলিতে অন্তত সাড়ে ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: হার মানছে অ্যান্টিবডি, আরও ভয়ঙ্কর ব্রাজিলের P1 করোনা ভাইরাস! শঙ্কিত গবেষকরা]
মায়ানমারে নববর্ষের সপ্তাহ চলছে। এই সপ্তাহে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ফের একবার গর্জে উঠছেন গণতন্ত্রকামীরা। সপ্তাহজুড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিলের পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। এবার সেই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর তাঁদের রুখতে মরিয়া বাহিনীও। মান্দালয়ে প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন এলাকা ঘিরে ফেলে বাহিনী। শুরু হয় গুলি চালনা। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি মিজিমা সংবাদ সংস্থা। তবে কতজনের মৃত্যু হয়েছে বা কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসির বার্মিজ সার্ভিসও।
তবে এবার পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন মায়ানমারের (Myanmar) আমজনতা। সেনার উপর চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছেন তাঁরাও। যেমন রবিবার সকালে মান্দালয়ের মায়াদি ব্যাংকের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে এক নিরাপত্তাকর্মী গুরুতর জখম হন। মায়াদি ব্যাংকের বাইরে বিস্ফোরণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই ব্যাংকটি পরিচালনা করে সে দেশের সেনাবাহিনী। এই ব্যবসা থেকেই মোটা টাকা আয় করে তারা। কিন্তু ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মায়ানামারের আমজনতা ব্যাংকটিকে বয়কট করতে শুরু করেছেন। এমনকী, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থও তুলে নিতে চাইছেন অনেকে। এর মাঝেই ব্যাংকটির সবচেয়ে বড় শাখার সামনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। বিস্ফোরণে হতাহতের খবর না মিললেও গোটা এলাকায় নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।