সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের (Rohingya) সমস্যা তৈরির জন্য দায়ী মায়ানমার (Myanmar)। তাই তাদেরই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে দ্ব্যর্থহীন সুরে জানিয়ে দিল আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দল। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের কাজের ভূমিকার প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক সংগঠনটি। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলি পরিদর্শন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, কানাডার হাইকমিশনের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন।
কক্সবাজারে দু’দিনের সফরে এসেছিলেন আন্তর্জাতিক ওই প্রতিনিধি দলটি (International Observers)। পরিদর্শন শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজেদের মতামত জানান তাঁরা। প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন হতে হবে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে। রোহিঙ্গাদের সমস্যার উৎস মায়ানমারেই, তাই মায়ানমারকেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস হামলাকারীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তাদানকারী রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়কারী ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ-আইএসসিজি’র দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সৌদিতে থাকা ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে ‘চাপ’, সরব বিদেশমন্ত্রী]
বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বলেন, ”কোভিড-১৯’এর কারণে কয়েক মাসের প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞার পর রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন এবং বাংলাদেশের প্রতি একাত্মতা অনুভব করতে অংশীদারদের সঙ্গে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের গৃহীত সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে কোভিড-১৯’এর সংক্রমণ প্রশমিত হতে দেখছি; এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় এক্ষেত্রে একটি কার্যকর এবং জীবন রক্ষাকারী সাড়া দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বদলের ইঙ্গিত, সম্পত্তিতে হিন্দু মেয়েদের অধিকার নিশ্চিত করতে আইনি নোটিস]
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার সময় শরণার্থীরা কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের কথা তুলে ধরেন। কানাডিয়ান হাইকমিশনের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান ফেড্রা মুন মরিস বলেন, ”শরণার্থীরা কোভিড-১৯ থেকে নিজেদের সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে, নিজেরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত, তাদের অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেওয়া।” প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্রগুলিও পরিদর্শন করেন। যদিও এগুলো করোনার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শরণার্থীদের মধ্যে হতাশা, শিশুদের প্রতি হিংসা, বাল্যবিবাহ এবং শিশু শ্রমের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
The post রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব পুরোপুরি মায়ানমারের, স্পষ্ট মত আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের appeared first on Sangbad Pratidin.