সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারের (Myanmar) ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী আং সান সু কি-কে (Aung San Suu Kyi ) আরও চার বছরের জেলের সাজা শোনাল মায়ানমারের একটি আদালত। গত ডিসেম্বরেই তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সোমবার এর সঙ্গে যোগ হল আর চার বছর।
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওয়াকি টকির বেআইনি আমদানি ও দেশের করোনা বিধিভঙ্গ— এই দুই নতুন অভিযোগে নতুন করে সাজা শোনানো হল দেশের গণতান্ত্রিক নেত্রীকে। গত ডিসেম্বরে শান্তির নোবেলজয়ী সু কি-কে চার বছরের জেলের সাজা শোনানো হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে সেনার বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে এই সাজা শোনানো হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে হিংসা অব্যাহত কাজাখস্তানে, গত দু’দিনে মৃত ১৬৪]
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আচমকা দেশের ক্ষমতা কেড়ে নেয় সেনাবাহিনী। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারকে উপড়ে ফেলে নেত্রী আং সান সু কি-কে বন্দি করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা চলছে। এ তারপরও গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। পাল্লা দিয়ে দমনপীড়ন শুরু করে সর্বশক্তিমান জুন্টা। এপর্যন্ত সেনাবাহিনীর অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষের।
উল্লেখ্য, জেলযাত্রা নতুন নয় মায়ানমারের (Myanmar) ৭৬ বছরের গণতান্ত্রিক নেত্রীর। বরং তাঁর জীবনের অধিকাংশই কেটেছে কারাগারে। সেনা শাসনাধীন মায়ানমারে একাধিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে সু কি-কে দীর্ঘ সময়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তিনি মুক্তি পেয়ে গণতান্ত্রিক পথে হেঁটে, ভোটে লড়াই করে রাষ্ট্রপ্রধানও নির্বাচিত হন। মায়ানমারে ফিরে আসে গণতন্ত্র। কিন্তু সু কি দেশের প্রধান হয়ে কুরসিতে বসার পর পরই তাঁর বিরুদ্ধে ফের একাধিক অভিযোগ উঠতে থাকে। এমনকী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। মনে করা হচ্ছে, যদি শেষ পর্যন্ত সু কি’র বিরুদ্ধে আনা আরও অন্তত ১১টি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে ১০০ বা তারও বেশি সময়ের জন্য কারাবাসের সাজা শোনানো হতে পারে তাঁকে!
সু কি’র সমর্থক ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষকদের অবশ্য দাবি, সামরিক বাহিনীর হাতেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং সু কি-কে রাজনীতির মূলস্রোতে ফিরতে না দেওয়ার জন্যই এই সব অভিযোগ তুলছে জুন্টা।