সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমবার ইথিওপিয়া সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করতে এবং বিশ্বনেতা হিসাবে দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য মোদিকে ইথিওপিয়ার সর্বোচ্চ সম্মান ‘দ্য গ্রেট অনার নিশান অব ইথিওপিয়া’তে ভূষিত করা হয়েছে। কিন্তু কেন ইথিওপিয়া সফরে মোদির? বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকার দেশগুলিতে চিনের আধিপত্য যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার মোকাবিলা করতেই দিল্লির এই নতুন ছক।
গোটা আফ্রিকা মহাদেশ খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। ইউরেনিয়াম, বিরল খনিজ, হিরে তো বটেই সম্প্রতি জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার পাওয়া গিয়েছে এই মহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পাশাপাশি, এখানে রয়েছে লিথিয়াম, দস্তা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিরল খনিজ। উল্লেখ্য, লিথিয়াম ব্যাটারি তৈরির জন্য অপরিহার্য খনিজ, অন্যদিকে বিরল খনিজ যে কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি ক্ষেপণাস্ত্র, স্যাটেলাইট এবং মহাকাশ গবেষণায় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ।
আফ্রিকার এই দেশগুলিতে সাম্প্রতিক সময়ে থাবা বসিয়েছে চিন। চিনের আধুনিক শিল্পব্যবস্থা লিথিয়াম, কোবাল্ট, নিকেল, বিরল খনিজ, কপার, বক্সাইট এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজের উপর নির্ভরশীল। কারণ, আফ্রিকায় এই সব খনিজগুলি সহজলভ্য এবং তুলনামূলকভাবে সস্তা। তাই চিন চাইছে তাদের দীর্ঘমেয়াদি কাঁচামাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রযুক্তি ও পুঁজির ঘাটতি এবং দুর্বল পরিকাঠামো-সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত আফ্রিকার দেশগুলি। আর তারই সুযোগ নিতে চাইছে বেজিং। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘গরিব’ আফ্রিকার উন্নত রাস্তা, রেল ব্যবস্থা, বন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র বানিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে দীর্ঘমেয়াদি খনিজ উত্তোলনের অধিকার কয়েম করার লক্ষে চিন।
উল্লেখ্য, সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মোদির বিদেশ সফর। প্রথম পর্যায়ে জর্ডনে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর ইথিওপিয়ায় গিয়েছেন তিনি। এরপর ওমানে যাওয়ার কথা মোদির। তিন দেশে সফর সেরে ১৮ তারিখ দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে গোটা বিশ্বের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে মাঝেমধ্যেই বিদেশ সফরে গিয়েছেন মোদি। তা নিয়ে তাঁকে বিরোধীদের কম খোঁচা সহ্য করতে হয়নি। তবে এসব সফর যে আসলে সুসম্পর্ক স্থাপনের অনুকূলই হয়েছে, তারও প্রমাণ মিলেছে বারবার।
