সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ দিনের জার্মানি সফরে মিউনিখে বিএমডব্লিউ-এর প্রদর্শনীকেন্দ্র এবং কারখানা ঘুরে দেখেছেন রাহুল গান্ধী। সমাজ মাধ্যমে সেই কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই পোস্টে, দেশীয় সংস্থার তৈরি বাইক দেখে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও, দেশের উৎপাদন ব্যবস্থার খারাপ অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। বুধবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন উৎপাদন হল শক্তিশালী অর্থনীতির 'মেরুদণ্ড'।
জার্মানি সফরের অংশ হিসেবে মিউনিখে বিএমডব্লিউ ওয়েল্ট এবং বিএমডব্লিউ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করার পর কংগ্রেস নেতা এই মন্তব্য করেন। বিএমডব্লিউ-র উৎপাদন কারখানায় ঘুরে দেখার দৃশ্য পোস্ট করে তিনি লেখেন, 'জার্মানির মিউনিখে বিএমডব্লিউ ওয়েল্ট এবং বিএমডব্লিউ প্ল্যান্টের গাইডেড ট্যুরের মাধ্যমে বিএমডব্লিউ-র দুনিয়া দেখার সুযোগ পেয়েছি। এটি বিশ্বমানের উৎপাদনের এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য।' রাহুলের দাবি, এই কারখানায় টিভিএস-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি হওয়া ৪৫০ সিসির মোটরবাইক তাঁকে বিশেষ আকর্ষণ করেছে। রাহুলের দাবি, জার্মানির মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় ভারতের জাতীয় পতাকা তাঁর কাছে গর্বের বিষয়।
ভারতে উৎপাদন ক্ষেত্রে আরও বেশি উন্নতির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "শক্তিশালী অর্থনীতির মেরুদণ্ড হলো উৎপাদন। দুঃখের বিষয়, ভারতে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। বৃদ্ধি দ্রুত করতে হলে আমাদের আরও উৎপাদন করতে হবে। আমাদের দেশে শক্তিশালি উৎপাদন ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হবে তবেই বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে।" প্রগতিশীল জোট নামে বিশ্বজুড়ে ১১৭টি প্রগতিশীল দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ জোটের আমন্ত্রণে গান্ধী জার্মানি সফর করছেন। এই সফরে, প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এর পাশাপাশি জার্মান সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গেও দেখা করবেন।
অন্যদিকে, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারী বুধবার গান্ধীর 'উৎপাদন হ্রাস' সংক্রান্ত মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। এই বক্তব্যকে ভারতের বৃদ্ধির বিরুদ্ধে 'ভুয়া খবর' বলেছেন তিনি। বিজেপি মুখপাত্র এক্স হ্যান্ডেলের একটি পোস্টে দাবি করেছেন, গত ১০ বছরে মোট ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন ৪৯৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, রপ্তানি ৭৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১৯৯১ সালের পর থেকে মোটরগাড়ি উৎপাদন ১৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ কোটি গাড়ি উৎপাদন এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ২টি গাড়ি প্রস্তুতকারকের মধ্যে স্থান পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
রাহুলের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রে রে করে উঠেছে বিজেপি। এই বিদেশ সফর ঘিরে বিজেপির তরফে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের মাঝেই বিদেশ সফরে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। দলের সাংসদ সম্বিত পাত্র লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিশানা করে বলেন, "যখন সংসদের অধিবেশন চলছে তখন বিরোধী দলনেতা বিদেশে গিয়ে ভারত বিরোধী মন্তব্য করছেন। এর থেকেই স্পষ্ট হয় কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধী দেশ সম্পর্কে কি ভাবনা চিন্তা করেন। দায়িত্বজ্ঞানহীন বিরোধী দলনেতা হলেই নিজের দেশ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করা সম্ভব।" পাল্টা জবাবে রাহুলের বোন ও কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বছরের অর্ধেক সময় বিদেশ সফরেই থাকেন। সেক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার সফর নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও যুক্তি নেই। ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে রাহুল গান্ধীর জার্মানি সফর।
