সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুল্কযুদ্ধের আবহে ভারতের অর্থনীতিকে 'মৃত অর্থনীতি' বলে মন্তব্য করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওমান সফরে গিয়ে নাম না করে সেই আমেরিকার অর্থনীতিকেই খোঁচা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের অর্থনীতি দ্রুত এগোচ্ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলি ধুঁকছে! অনেকের মত, নাম না করলেও মোদি আসলে আমেরিকার কথাই বলতে চেয়েছেন, কারণ আমেরিকাই এই মুহূর্তে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি বলে বিবেচিত হয়।
সম্প্রতি ত্রিদেশীয় সফরে বেরিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জর্ডন ও ইথিওপিয়ার সফর সেরে বৃহস্পতিবারই তিনি ওমানের রাজধানী মাস্কটে পৌঁছেছেন। সেখান থেকেই তিনি বলেন, "কয়েক দিন আগেই আর্থিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি। এর অর্থ, গোটা বিশ্ব নানা সমস্যার সম্মুখীন হলেও ভারতের অর্থনীতি দ্রুত এগোচ্ছে। বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলি যখন ধুঁকছে, তখন ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি এতটা বেশি। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে ভারত কী করতে পারে।"
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির গতি ঊর্ধ্বমুখীই। প্রথম ত্রৈমাসিকের ধারা বজায় থেকেছে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও। শুধু তা-ই নয়, গত ছ’টি ত্রৈমাসিকের হিসাব ছাপিয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপির হার দাঁড়িয়েছে ৮.২ শতাংশ। জিডিপি বৃদ্ধির এই পরিসংখ্যা দিয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা (এনএসও)।
আমেরিকার সঙ্গে ভারতের শুল্কযুদ্ধ অব্যাহত। দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত না-হওয়ায় এখনও ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কচাপ যে ভারতের জিডিপি-তে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি এখনও, তা স্পষ্ট আর্থিক বৃদ্ধির গতির হিসাবেই। ঘটনাচক্রে, ভারতের উপর শুল্কের হার ঘোষণা করতে গিয়ে ট্রাম্প, ভারতীয় অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন, "ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করবে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। নিজেদের মৃত অর্থনীতি নিয়ে একসঙ্গে ডুবে যেতে পারে ওরা। ভারতের সঙ্গে যৎসামান্য ব্যবসা-বাণিজ্য করেছি আমরা। ওদের শুল্ক খুব বেশি, পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ। একইভাবে, রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যেও ব্য়বসা-বাণিজ্য নেই। সেটাই বজায় থাকুক।" শুধু তা-ই নয়, দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদেরাও ট্রাম্পের শুল্ক ধার্যের পর ভারতীয় অর্থনীতিতে ধসের আশঙ্কা করেছিলেন। ট্রাম্পের শুল্ককাঁটার প্রভাব দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে পড়তে পারে বলেও মনে করেছিলেন অনেকে। যদিও পরিসংখ্যান অন্য় কথাই বলছে। অনেকের, এ বার এই পরিসংখ্যান টেনেই ট্রাম্পকে খোঁচা দিলেন মোদি।
