সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানে খুন হচ্ছে একের পর এক কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী। পড়শি দেশটিতে গত দুবছরে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত বারো জন জেহাদি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এরা প্রত্যেকেই ছিল ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে।
সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি বলে পরিচিত পাকিস্তান। ভারতে জেহাদের বিষ ছড়াতে কোমর বেঁধে নেমেছে ইসলামাবাদ। যেনতেন প্রকারে জম্মু ও কাশ্মীরের আবহাওয়া বিষিয়ে দিতে সচেষ্ট আইএসআই। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানে মঞ্চস্থ হচ্ছে এক নতুন নাটক। এক রিপোর্ট বলা হয়েছে, গত দুবছরে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত হেনেছে গুপ্তঘাতকরা। মৃত্যুবাণের শিকার হয়েছে অজ্ঞাত অন্তত বারো জন জেহাদি। নিহতদের মধ্যে রয়েছে লস্কর-ই-তইবা, হিজবুল মুজাহিদিন, জইশ-ই-মহম্মদ ও খলিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের নেতারা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এরা প্রত্যেকেই ছিল ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে। এই হত্যাগুলোর নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন: খলিস্তানি জঙ্গি খুনের তদন্ত শেষ না হলে নয়া বাণিজ্য চুক্তি নয়, ভারতকে সাফ বার্তা কানাডার]
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের বুকে ‘অপারেশন র্যাথ অফ গড’-এর কায়দায় অভিযান চলছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৬-এর মিউনিখ অলিম্পিক হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ‘অপারেশন র্যাথ অফ গড’ শুরু করেছিল ইজরায়েল। ইউরোপ-সহ বিশ্বজুড়ে প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি সংগঠন ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’-এর নেতাদের হত্যা করে মোসাদ। ২০২১ সাল থেকে এভাবেই পাকিস্তানের বুকে গোপন মিশন শুরু হয়েছে। ওই বছরই লাহোরে লস্কর-ই-তইবার প্রধান তথা মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদকে খুন করার চেষ্টা হয়। সেবার কোনও মতে প্রাণে বেঁচে যায় সইদ। তার পর থেকেই, অজ্ঞাত মোটরসাইকেল আরোহীদের হাতে খুন হয়েছে বেশ কয়েকজন জেহাদি।
সাম্প্রতিকতম ঘটনা ১৩ নভেম্বরের। করাচিতে ঘাতকদের হাতে প্রাণ দেয় মৌলানা রহিমউল্লা তারিক। জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ ছিল সে। এর আগে, ৯ নভেম্বর খুন হয় লস্কর জঙ্গি আকরাম খাব ওরফে আকরাম গাজী। থাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তাকে গুলি করে খুন করা হয়। আততায়ী কারা যানা যায়নি। এই ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে পাক সরকার। তাদের দাবি, ঘটনার নেপথ্যে শত্রুদেশের গুপ্তচর সংস্থার হাত রয়েছে। ইঙ্গিতে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র’কেই দায়ী করছে ইসলামাবাদ।
বলে রাখা ভালো, বিগত দিনে কানাডাতেও একের পর এক খলিস্তানি নেতা খুন হয়েছে। যাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হরদীপ সিং নিজ্জর। খুনের ঘটনায় ভারতের দিকে আঙুল তুলেছে কানাডার জাস্টিন ট্রুডো সরকার। ওটয়ার সঙ্গে তুঙ্গে পৌঁছেছে নয়াদিল্লির টানাপোড়েন। এই কাণ্ডে RAW-এর ছায়া দেখছে অনেকে।