সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জলই জীবন, জলেই প্রাণ। পৃথিবীর বাইরে বাসযোগ্য গ্রহ খুঁজে বের করার পক্ষে এই একটিই শর্ত। সৌরজগতের এতগুলি গ্রহের মধ্যে তার বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত কোথাও পাওয়া গেলেই আনন্দের সীমা থাকে না আমাদের। আর প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলে (Mars) যদি সেই ছিঁটেফোঁটাও পাওয়া যায় তবে তো কথাই নেই। মঙ্গলকে ঘিরে বাড়বেই উৎসাহ, অনুসন্ধান। আর সেই উৎসাহী, অনুসন্ধিৎসু মনই আরও বেশি করে লালগ্রহে জলের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখছে, জল নয়, এ তো অন্য কোনও তরলের স্রোত। অন্তত Radar-এর সিগন্যাল তো তেমনই বলছে। দেখেশুনে তাঁরা বলছেন, জল তরল আকারে থাকার পক্ষে মঙ্গল অনেক বেশি শীতল।
মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুতে ভূগর্ভে স্রোতপ্রবাহের ইঙ্গিত পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ESA) বিশেষ যন্ত্রের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছিল, লালগ্রহের অভ্যন্তরে রয়েছে জলের (Water) স্রোত। মনে করা হচ্ছিল, তা কোনও হ্রদের অংশ কি না। সেই জলে প্রাণধারণ আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিস্তর গুঞ্জন, জল্পনা। কিন্তু সম্প্রতি সেই পর্যবেক্ষণ কিংবা ইঙ্গিত বদলে যাচ্ছে আরেকদল বিজ্ঞানীর দাবিতে। এ নিয়ে ৩ পাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত জার্নালে। তারপর থেকেই ভিন্নতর জল্পনা উসকে উঠেছে। বলা হচ্ছে, যদি বা জলের কোনও উৎস থেকে থাকে, তাহলে তা মঙ্গলের মাটির অনেকটা ভিতরে এবং তা মাটি চুঁইয়ে আসা তরল। অত্যধিক শীতল তাপমাত্রায় এখানকার হ্রদ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাজছে বিপদঘণ্টি, এই সপ্তাহেই Greenland-এর বরফগলা জলে ডুবতে চলেছে Florida]
লালগ্রহ নিয়ে যখন এমনই আশা-আকাঙ্খার দোলাচল, সেসময় নাসার (NASA)জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে (JPL) বসে রাডারে ধরা পড়া সিগন্যাল পরীক্ষায় মগ্ন ছিলেন দুই বিজ্ঞানী – আদিত্য আর খুল্লার এবং জেফ্রি জে প্লট। ৪৪ হাজার প্রতিধ্বনি (Echo) চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, এগুলো সবই মঙ্গলপৃষ্ঠের ভিতর দিকের। আর সেই অংশ এতটাই শীতল যে তরল আকারে জল থাকার পক্ষে বস্তুত অসম্ভব। মঙ্গলের অন্তভাগের তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, কার্ভার বিয়েরসন এবং আইজ্যাক স্মিথ নামে দুই বিজ্ঞানী পরীক্ষানিরীক্ষা করে দাবি করেন, মঙ্গলে শুধু মাটি আর কাদার উপস্থিতি। জলীয় অংশের উৎস সম্ভবত সেটাই। কিন্তু সেই তরল অংশ H20 নাকি অন্য কিছু? এই নিয়ে নতুন গবেষণা শুরু হয়ে গেল। ফের সন্দেহের মুখে পড়ল প্রতিবেশী গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা।