সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সংখ্যার দম্ভে সপ্তম আকাশে থাকার সময় যাঁদের ‘মার্গদর্শক মণ্ডল’ উল্লেখ করে বাস্তবে রাজনৈতিক বাণপ্রস্থে যাওয়ার মার্গ দেখিয়ে দিয়েছিলেন, জীবনে প্রথমবার জোট সরকারের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর সেই লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর যোশীদের কাছেই ছুটে গেলেন নরেন্দ্র মোদি।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নতুন অবতারে দেখা মিলেছে মোদির। এতদিন যাঁর মুখে থাকত মোদি সরকারের গৌরব, এখন কথায় কথায় তিনি উল্লেখ করেন এনডিএ-র। তিন দশকের পুরনো দুয়োরানি থাকা সঙ্গীরা গত ১০ বছরে ব্রাত্য থাকার পর হঠাৎ করেই পাওয়া শুরু করেছে বাড়তি গুরুত্ব। আসলে সহজ পাটিগণিতে প্রধানমন্ত্রী বুঝে গিয়েছেন, সরকার চালাতে গেলে এবার সঙ্গীদের চটানো যাবে না। পৌনে ১৩ বছর গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ও গত দশ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কখনওই মোদিকে জোটসঙ্গীদের নিয়ে চলতে হয়নি। বরাবরই বিজেপি ছিল একক সংখ্যাগুরু। এবার আর তা না হওয়াতেই মোদির এই ভোলবদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারীরা। তাঁদের মতে, যেহেতু শরিকদের নিয়ে চলার অভিজ্ঞতা নেই, তাই দলের প্রাক্তন হয়ে যাওয়া নেতাদের পরামর্শও যে ভবিষ্যতে লাগতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই এদিন আদবানি, যোশীদের কাছে ছুটলেন মোদি।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ মোদির, সরকার গঠনের দাবি পেশ এনডিএর]
পুরনো লোকসভা ভবনের সেন্ট্রাল হলে এনডিএ নেতা নির্বাচনের বৈঠক শেষ করেই নরেন্দ্র মোদি ছুটলেন আডবাণীর বাড়ি। সেই ছবি সামাজিকমাধ্যমে প্রকাশ করে লিখলেন, ‘আদবানিজির বাড়ি গিয়ে তাঁর আশীর্বাদ চেয়ে এলাম। দলকে যেভাবে শক্তিশালী করেছেন আডবাণীজি, তা দেখে দলের প্রত্যেক কার্যকর্তা অনুপ্রাণিত হয়।’ এরপর সোজা যান মুরলী মনোহর যোশির কাছে। সেই ছবির সঙ্গে লেখেন, ‘ডা. যোশীর ডাক পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এলাম। সংগঠনের কাজ করার সময় ওঁর থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্য উনি গোটা দেশে সমাদৃত।’
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে তো বটেই, গোটা এনডিএতে নেই একজনও সংখ্যালঘু সাংসদ]
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, ফলপ্রকাশের পর থেকে নরেন্দ্র মোদির যে পরিবর্তন তার সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। হাতি এবার সত্যিই পাকে পড়েছে।