সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। মহাকাশে শুধু আবর্জনাস্তূপ গড়া হচ্ছে। চিনের (China) পাঠানো রকেট ভারত মহাসাগরে ভেঙে পড়ায় ঠিক এই ভাষাতেই সেই দেশকে ভর্ৎসনা করল মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা (NASA)। সংস্থার প্রশাসক সেনেটর বিল নেলসন এই মর্মে নিজেদের ওয়েবসাইটে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। কীভাবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ মহাকাশ প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে এত বড় ভুল করল, তা নিয়ে বিস্মিত নাসা। প্রসঙ্গত, চিনের পাঠানো লং মার্চ ৫বি রকেটটি (Rocket) বেশ শক্তিশালী ছিল। তা নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন ছিল চিনের। সেই স্বপ্ন যে অচিরেই ভারত মহাসাগরের বুকে তলিয়ে যাবে, ভাবতে পারেননি চিনা মহাকাশবিজ্ঞানীরা। আর এই ব্যর্থতার জন্যই নাসার এত সমালোচনার মুখে পড়ল শি জিনপিংয়ের দেশ।
ঘটনা আসলে কী? জানা গিয়েছে, মহাকাশে নিজেদের একটি মহাকাশ স্টেশন বানাতে চলেছে বেজিং। ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’ নামের সেই স্টেশনটি উৎক্ষেপণ করার আগে এখন চলছে সলতে পাকানোর কাজ। পরীক্ষামূলকভাবে ওই স্টেশনের একটি মডিউল, বলা যায় অংশকে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠানো হয় গত ২৮ এপ্রিল। তাকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার ভার ছিল লং মার্চ ৫বি রকেটটির উপরে। উৎক্ষেপণ সফলও হয়েছিল। মহাকাশ স্টেশনটিকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করেও ফেলে রকেটটি। কিন্তু তার ভিতরের ১০০ ফুট লম্বা একটি অংশ রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর তারপর তা তীব্রগতিতে ছুটে আসে পৃথিবীর অভিমুখে।
[আরও পড়ুন: অবশেষে স্বস্তি! জনবসতি এড়িয়ে ভারত মহাসাগরে ভেঙে পড়ল চিনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ]
তখন থেকেই বাড়ছিল আশঙ্কা। রকেটটির উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না চিনের। নিউ ইয়র্ক কিংবা মাদ্রিদের মতো শহরে তা আছড়ে পড়ার শঙ্কা ঘণীভূত হচ্ছিল। উল্লেথ্য, এর আগে চিন আরও একটি মার্চ ৫বি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল। সেবারও সেটি ভেঙে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত আইভরি কোস্টের বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেটির ধাক্কায়। সেই ঘটনাকে মাথায় রেখেই এবারও আতঙ্ক বাড়ছিল। অবশেষে সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে ভারত মহাসাগরের বুকে ভেঙে পড়ল রকেটটির ধ্বংসাবশেষ।
[আরও পড়ুন: ‘হাওয়া বয় শনশন’! মঙ্গলে বায়ুপ্রবাহের শব্দ রেকর্ড করে পাঠাল নাসার বিশেষ যান]
এ নিয়ে নাসার বিল নেলসনের বক্তব্য, মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত দেশগুলির আরও সাবধান হওয়া উচিত। মহাজাগতিক কোনও বস্তুর প্রভাব পৃথিবীর উপর কীভাবে পড়তে পারে, তা ভেবে তবেই কাজে হাত দেওয়া উচিত। নয়তো বড় বিপদ হবেই। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে চিন উভয় সংকটে। মহাকাশে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের স্বপ্ন চুরমার, আবার আন্তর্জাতিক মহলের কাছে মুখও পুড়েছে চিনের।