সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্ধকারের উৎস থেকেই আলো উৎসারিত হয়। জগতের এ নিয়ম খণ্ডাবে, তার সাধ্যি বোধহয় নেই মহাজগতের অতি শক্তিশালী রাক্ষুসে কৃষ্ণগহ্বরেরও (Black Hole)। তাই তো মহাজাগতিক তত্ব মেনেই হোক কিংবা জগতের স্বাভাবিক নিয়মেই, কৃষ্ণকালো গহ্বরেও দেখা গেল আলোর ঝলকানি। সম্প্রতি আমেরিকার সান ডিয়েগোয় নাসার পালোমার অবজারভেটরি থেকে দেখা ছবিতে রীতিমত তাজ্জব জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহল। তাঁদের মতে, নাসার এই ছবি ব্ল্যাক হোলের নতুন দিক সামনে এনে দিতে পারে।
মহাকাশে কৃষ্ণগহ্বরের চরিত্র আরও গভীরভাবে জানতে দুটি অতি শক্তিশালী মহাকর্ষীয় তরঙ্গ চিহ্নিতকারী (Gravitational Wave Detector) যন্ত্র বসিয়েছিল নাসা। যার একটি ছিল সান ডিয়েগোর কাছে পালোমার অবজারভেটরিতে। এখানে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ক্যালটেকের ZTF যন্ত্র। মহাকর্ষীয় তরঙ্গের খুঁটিনাটি ধরতে পারে, এমন শক্তিশালী যন্ত্র খুব কমই আছে। এই যন্ত্রেই দেখা গেল সেই অস্বাভাবিক ঘটনা। কৃষ্ণগহ্বরে আলোর তরঙ্গ!\
[আরও পড়ুন: আকাশের গন্ধ কেমন? জানাবে নাসার উদ্যোগে তৈরি সুগন্ধি!]
কীভাবে সম্ভব এমনটা? যন্ত্র থেকে নেওয়া তথ্য, ছবি বিশ্লেষণ করে নাসার বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। মহাকাশে দুটি কৃষ্ণগহ্বর প্রবল গতিতে ঘুরতে ঘুরতে পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে অর্থাৎ মহাকাশে ঘটে গিয়েছে ব্যাপক এক সংঘর্ষ (Collision)। তাতে ব্ল্যাক হোল দুটির শরীর নষ্ট হয়ে গিয়ে জন্ম নিয়েছে তাদের তুলনায় ছোট দুটি ব্ল্যাক হোল। আর আলোর তরঙ্গ দেখা গিয়েছে নবজাতকদের শরীর থেকে। সেখানেই জাগছে বিস্ময়। সংঘর্ষের পর কি আলো গিলে ফেলে না কৃষ্ণগহ্বর? সেখানে কি আলোর তরঙ্গ (Wave nature) এবং কণা প্রকৃতি (Particle Nature) – দুটোই বর্তমান অন্তত কিছুটা সময়ের জন্য? সে কারণেই কি আলোর ঝিলিক চোখে পড়ছে? এখানে রহস্য বাড়াচ্ছে নতুন জন্ম নেওয়া ব্ল্যাক হোলগুলি।
[আরও পড়ুন: সূর্যের ১০ বছরের যাত্রা ধরা পড়ল মাত্র ১ ঘণ্টায়! সৌজন্যে নাসার ‘টাইম ল্যাপস’ ভিডিও]
নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির (JPL) গবেষক ড্যানিয়েল স্টার্ন বলছেন, “দুটো ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষের পর যখন নতুন কৃষ্ণগহ্বরের জন্ম হয়, তখন যে কী কী ঘটনা ঘটে, সে সম্পর্কে নতুন করে জানতে পারলাম। অতি বড় কৃষ্ণগহ্বরের (Supermassive Black Hole) চারপাশে ঘূর্ণায়মান অন্যান্য ব্ল্যাক হোলের চরিত্রই বা কী, তাও বুঝতে হবে।” মজার বিষয় হল, এসব ঘটনা কিন্তু মহাকাশের বুকে ঘটে গিয়েছে অতীতে। আলোক তরঙ্গ পৃথিবীতে পৌঁছতে সময় লেগেছে। সেটুকু সময় পরই গোটা ঘটনা চোখে পড়েছে নাসার বিজ্ঞানীদের। অঙ্কের হিসেব বলছে, ২০১৯এর মে মাসেই কৃষ্ণগহ্বরে আলোর জন্ম হয়ে গিয়েছে। মহাকাশের পরতে পরতেই রহস্য যে!
The post কৃষ্ণগহ্বরে আলোর ঝলকানি! এ কোন মহাজাগতিক রহস্যের মুখে বিজ্ঞান? appeared first on Sangbad Pratidin.