সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন অনেকটা কেঁচো খুঁড়তে কেউটের মতো ব্যাপার। খোঁজা হচ্ছিল প্রাণের সন্ধান। আর নজরে পড়ল অন্য কিছু। লালগ্রহ নাসার পাঠানো যান ‘পারসিভিয়ারেন্স’ (Perseverance) নানা কিছু আবিষ্কার করতে করতে এগিয়ে চলেছে রুক্ষ মাটিতে। খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রাণের স্পন্দন, প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ। তার বদলে এ কী দেখল পারসিভিয়ারেন্স? মঙ্গলের (Mars) মাটিতে চকচকে এক সামগ্রী! নাসার মঙ্গলযানের পাঠানো সেই ছবি দেখে প্রথমে বিস্ময়ের শেষ ছিল না বিজ্ঞানীদের। পরে খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে তাঁদের পর্যবেক্ষণ, ওই জিনিসটি আদৌ মঙ্গলের নয়, পৃথিবীরই বস্তু। আর তা বয়ে নিয়ে গিয়েছে পারসিভিয়ারেন্সই।
মঙ্গলের নিরক্ষীয় অংশ, যা বিজ্ঞানীদের কাছে জাজেরো ক্রেটার (Jazero crater) বলে পরিচিত, সেখানেই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে পারসিভিয়ারেন্সের রোভার। সেখানে তার ক্যামেরায় ধরা পড়ে চকচকে একটি বস্তু। একটি পাথর আর ভূমির মাঝে তা আটকে ছিল। সেটি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা যা বুঝলেন, তা খানিকটা এরকম – লালগ্রহের মাটিতে এরকম এক বস্তু খুঁজে পাওয়া সহজ নয় মোটেও। তাই ও জিনিস মঙ্গলের নয়। পারসিভিয়ারেন্সের মধ্যে আটকে থাকা কোনও থার্মাল ব্ল্যাঙ্কেটের যন্ত্রাংশ, যা রোভারের চলাফেরার সময় খুলে পড়ে গিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: ভারতে নাশকতার ছক বানচাল, পাক সীমান্ত থেকে অস্ত্র উদ্ধার তালিবানের]
কী এই থার্মাল ব্ল্যাঙ্কেট (Thermal blanket)? যানটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বসানো একটি যন্ত্র। পারসিভিয়ারেন্স থেকে রোভারটি যখন পৃথক হয়ে মঙ্গলের মাটিতে নিজে চলাফেরা শুরু করে, সেসময়ই সম্ভবত ওই অংশটি খুলে পড়ে গিয়েছিল। মঙ্গলপৃষ্ঠের যেখানে রোভারটি (Rover) অবতরণ করেছিল, তার থেকে ২ কিলোমিটার দূরে এতদিন পর চোখে পড়েছে মঙ্গলযানটি। মঙ্গল অভিযান নিয়ে নাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীদের দলটির অনুমান, হয়তো সেই সময়ে খুলে পড়েছিল যন্ত্রাংশটি। পরে লালগ্রহের প্রবল ধুলোর ঝড়ে তা গিয়ে পড়েছে অন্যত্র। প্রসঙ্গত, পৃথিবীর এই প্রতিবেশী গ্রহটিতে ধুলোর ঝড়ের ভয়াবহতা কারও অজানা নয়। রীতিমতো নাস্তানাবুদ করা সেই ঝড়ে মঙ্গলযানের ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আমি নমাজ পড়ি না, ইফতারে গেলে আপত্তি কোথায়?’, নাম না করে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর]
বলা হচ্ছে, মঙ্গলের এই ‘জাজেরো ক্রেটার’ অংশটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গা থেকে লাল গ্রহের খামখেয়ালি আবহাওয়া সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল তথ্য পাওয়া যায়। আর তা বিশ্লেষণ করে প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব কি না, তার আঁচ পাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।