সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাগরে মিশতে চলেছে ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের ‘বিষাক্ত’ জল। জাপানের এই পদক্ষেপে ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিবেশপ্রেমীরা। রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।
২০১১ সালে জাপানের পূর্ব উপকূলে আঘাত হানে সুনামি। দানবীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমা আণবিক কেন্দ্র। তেজস্ক্রিয় বিকিরণের আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে দেশটি। তারপরই ফুকুশিমার ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আসলে ভয়াবহ সুনামি ও ভূমিকম্পের ধাক্কায় প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিগুলিকে ঠান্ডা করতেই ১০ লক্ষ মেট্রিক টন জল ব্যবহার করবে জাপান। গত সপ্তাহে সেই জল সমুদ্রে ফেলার অনুমতি দিয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (IAEA)। ফলে তেজস্ক্রিয় সেই জল মিশবে সমুদ্রে।
[আরও পড়ুন: টাইটান বিপর্যয় ঘিরে সমালোচনার ধাক্কা! সমস্ত টাইটানিক অভিযান বাতিল করল বিতর্কিত সংস্থা]
টোকিও অবশ্য দাবি করছে, ওই জল নিরাপদ। রেডিও অ্যাক্টিভ আইসোটোপগুলিকে সরাতে জল ফিল্টার করেই ছাড়া হবে। তবু আতঙ্কিত দক্ষিণ কোরিয়া। ভয়ে ভয়ে রয়েছেন সমুদ্র উপকূলের মৎস্যজীবী ও দোকানদাররা। শুক্রবার এনিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন দক্ষিণ কোরিয়ার সমন্বয় মন্ত্রী বাং মুন কি। তিনি জানান, জাপান সমস্ত নিয়ম মেনেই কাজ করছে। তেজস্ক্রিয় সেই জল সমুদ্রে মিশলে বিরাট কোনও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলার পর প্রায় বছর দশেক পর সেই জল কোরীয় উপত্যকার কাছে পৌঁছবে।
তবে মন্ত্রী বাং মুন কি-র এই আশ্বাসে চিড়ে ভিজছে না। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী দলগুলি প্রতিবাদে সরব। অনেক সাংসদই অনশনের হুমকি দিয়েছেন। এদিকে, আজই সিওল আসছেন ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ প্রধান রাফায়েল গ্রসি। তাঁর সফরেও বিপুল বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যত্রও। ইতিমধ্যেই নুনের চাহিদা ২৭ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সেদেশের সাধারণ নাগরিকরা মনে করছেন, সমুদ্রের জলে ওই তেজস্ক্রিয় জল মিশলে তা দূষিত হবে। এর ফলে জনস্বাস্থ্যের অবনতি হবে। ফলে নুন ও সি ফুডের দামও বাড়বে। তাই আগে থেকে সেগুলি মজুত করে রাখতে শুরু করেছেন তাঁরা।