নিরুফা খাতুন: বাঘরোলের (Fishing Cat) প্রজনন করতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় কৃত্রিম জঙ্গল ও জলাশয় তৈরি করা হয়েছে। বাংলার বন্যপ্রাণী বাঘরোল। অনেকটা বাঘের মতো এদের দেখতে। তাই অনেক সময় এলাকার মানুষ বাঘ ভেবে এদের মেরে ফেলে। যদিও এরা মানুষ কিংবা হাঁস মুরগি, গরু ছাগল কিছুই খায় না। এদের খাদ্য মাছ, কাঁকড়া, শামুক, ব্যাং। তাই এদের ‘মেছো বিড়াল’ও বলা হয়।
কিন্তু বাংলার এই প্রাণী বিলুপ্ত হতে বসেছে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাঘরোল কোথাও দেখা যায় না। বাঘের মতো দেখতে হলেও এরা আকারে ছোট। এরা উচ্চতায় ২ ফুট এবং চওড়ায় ৩ ফুট হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার বাঘরোলকে অতি বিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় রেখেছে। এখন রাজ্যে হাতেগোনা গুটিকয়েক জায়গায় যেমন পূর্ব কলকাতা জলাশয়, আমতা, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার হেনরি আইল্যান্ড এইসব এলাকায় বাঘরোল দেখা যায়।
[আরও পডুন: উত্তর আটলান্টিক সাগরে ঘনীভূত দৈত্যাকার উষ্ণ বলয়, দাবদাহে পুড়েছে কানাডা, USA]
অতি বিপন্ন বাঘরোলকে বাঁচাতে প্রজনন করা হচ্ছে। প্রজননের জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানার (New Alipur Zoo) ভিতরে বাঘরোলদের জন্য কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। চিড়িয়াখানায় ১২টি বাঘরোল রয়েছে। এরমধ্যে প্রজননের জন্য তিনটি স্ত্রী এবং তিনটি পুরুষ বাঘরোলকে ইতিমধ্যে আলাদা খাঁচাতে রাখা হয়েছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত জানান, বাঘরোল বিলুপ্তপ্রায়। তাই এদের প্রজনন করে সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এখন বন্যপ্রাণী প্রজননের সময়। বাঘরোলরা সাধারণত ঝোপঝাড়ের মধ্যে থাকে। মাছ, ব্যাং, শামুক, কাঁকড়া এসব খায় বলে এরা জলাশয়ের কাছাকাছি থাকে। সেজন্য চিড়িয়াখানায় বাঘরোলের প্রজনন করতে কৃত্রিমভাবে জঙ্গল ও জলাশয় তৈরি করা হয়েছে। প্রজননের জন্য তিন জোড়া বাঘরোলকে আলাদা রাখা হয়েছে। তারা এই কৃত্রিম পরিবেশে থাকবে।
[আরও পডুন: ঘরোয়া সামগ্রীতেই তৈরি মাস্ক পোড়ানোর পরিবেশবান্ধব যন্ত্র, অভিনব উদ্ভাবনী বাঁশদ্রোণির যুবকের]
বাঘরোলগুলোর ওপর নজরদারি করতে সিসিটিভি বসানো হয়েছে। ২৪ঘণ্টার জন্য পশু চিকিৎসকও রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রজননের পর বাঘরোলের যে ক’টি বাচ্চা হবে সেগুলো শৈশব পর্যন্ত চিড়িয়াখানাতেই থাকবে। শৈশব পার হয়ে গেলে তাদের নিজেদের পরিবেশে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে।