সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অন্যদিকে গাজায় ইজরায়েলি সেনার লাগাতার হামলা। এর মধ্যেই নতুন অশান্তির আগুন ছড়াল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ নিউ ক্যালিডোনিয়ায়। ফ্রান্সের অধীনস্থ এই দেশে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। পথে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। নিহতদের মধ্যে দুজন ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। দ্বীপের বাসিন্দাদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গেব্রিয়াল আতাল। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণই নেই।
প্রসঙ্গত, ১৭৭৪ সালে অস্টেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপ আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ নাবিক জেমস কুক। এখানকার ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিজের মাতৃভূমির মিল পেয়ে তিনি এর নাম রাখেন 'নিউ ক্যালিডোনিয়া'। ১৮৫৩ সালে তা পাকাপাকি ভাবে ফ্রান্সের হাতে চলে যায়। এই দেশের ৪৪ শতাংশই কনক সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁরাই এখানকার আদি বাসিন্দা। ৩৪ শতাংশ ইউরোপীয়, যাঁরা এখানে থাকেন তাঁদের সিংহভাগই ফরাসি। নিউ ক্যালিডোনিয়ার রাজধানীর নাম নৌমেয়া।
[আরও পড়ুন: ‘১৩ বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রথম শপথ’, পুরনো কথা স্মরণ মমতার]
সম্প্রতি এখানকার পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে একটি নতুন বিল। আর সেই বিল নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিলে বলা হয়েছে, যে সব ফরাসি নাগরিক ১০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে নিউ ক্যালিডোনিয়ায় বসবাস করছেন, তাঁরা ভোটাধিকার পাবেন। আর এই নিয়েই আপত্তি আদি বাসিন্দাদের। ক্রমে বিক্ষোভ আঁচ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আন্দোলনকারীদের রুখতে পথে নামে সশস্ত্র ফরাসি (France) পুলিশ বাহিনী ও আধাসেনার যৌথ বাহিনী।
বাহিনীর উদ্যোগে বিভিন্ন পথে প্রায় ৭৬টি বন্ধ রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। রাজধানী নৌমেয়া ও লা টনটৌটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংযোগকারী ৬০ কিমির রাস্তাকেও মুক্ত করা হয়েছে। যদিও আন্দোলনকারীরা, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কনক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, তাঁরা বহু রাস্তায় ফের অবরোধ গড়ে তুলেছেন। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও অবরোধের পরিমাণ আগের চেয়েও বিরাট। বাহিনীর তরফে তাঁদের অবরোধ তুলে নিতে নির্দেশ দিলেও বিক্ষোভের রাস্তা থেকে তাঁরা সরবেন না বলেই জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। সব মিলিয়ে নিউ ক্যালিডোনিয়া (New Caledonia) ক্রমেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে।