স্টাফ রিপোর্টার: সারোগেসি নিয়ে নতুন কেন্দ্রীয় আইন গোটা দেশে চালু হয়ে গিয়েছে। আর সেইমতো বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি গাইডলাইন প্রকাশ করে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, শুধুমাত্র শারীরিক ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা ছাড়া সারোগেসির আশ্রয় নেওয়া যাবে না। এবং তার জন্য ওই নিঃসন্তান দম্পতির প্রথমেই দরকার সারোগেসি বিষয়ক জেলাস্তরের মেডিক্যাল বোর্ডের শংসাপত্র। মেডিক্যাল কারণেই স্বাভাবিক গর্ভধারণ সম্ভব নয়, এই মর্মে লেখা সেই সার্টিফিকেটে চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে রাজ্যস্তরের সারোগেসি অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অথরিটি।
নয়া নির্দেশিকায় সারোগেসির নেপথ্যে শারীরিক সৌন্দর্য বজায় রাখা কিংবা সর্বক্ষণ ব্যস্ততার মতো ইস্যুকে কারণ হিসাবে আর দেখানো যাবে না। এই ধরনের ওজরকে ন্যূনতম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সরকারি আদেশনামায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, তখনই কোনও মহিলা সারোগেসির আশ্রয় নিতে পারবেন যদি তাঁর জরায়ু না থাকে বা জরায়ুতে কোনও অস্বাভাবিকতা থাকে অথবা সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েও বারংবার গর্ভধারণে ব্যর্থ হন কিংবা কোনও অসুখের কারণে গর্ভধারণ করা ঝুঁকির। কোনও মহিলার যদি অন্য কোনও কারণেও গর্ভসঞ্চারের পর গর্ভ নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তিনিও সারোগেসির আশ্রয় নিতে পারবেন। তবে লিভ টুগেদারের ক্ষেত্রে সারোগেসি করানো যাবে না। হয় হতে হবে একক মা বা সিঙ্গল মাদার, অথবা হতে হবে বিবাহিত যুগল।
[আরও পড়ুন: বারাকপুরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বৈঠক, ‘অপরাধীকে রেয়াত নয়’, কড়া বার্তা রাজ্য পুলিশের ডিজি’র ]
শারীরিক এই সমস্যার কথা উল্লেখ থাকতে হবে জেলাস্তরের মেডিক্যাল বোর্ডের শংসাপত্রে। নিঃসন্তান হওয়াটা আবশ্যিক সারোগেসির জন্য। ইচ্ছুক দম্পতির যদি সন্তান থাকে, তা হলে সারোগেসি করা যাবে না। আরও নিয়ম হল, সারোগেট মা-কে অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে এবং ন্যূনতম একটি জীবিত সন্তানের মা হতে হবে। ওই দম্পতি যে সারোগেট মায়ের তিন বছরের স্বাস্থ্যবিমা করিয়ে দিচ্ছেন, সে বিষয়ে হলফনামাও জমা দিতে হবে ইচ্ছুক দম্পতিকে। সব নথি জমা পড়বে স্টেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অথরিটির কাছে। তারাই দেবে চূড়ান্ত অনুমোদন।
তবে এর জন্য ইচ্ছুক দম্পতির মধ্যে স্বামীর বয়স ২৬-৫৫ বছরের মধ্যে ও মহিলার বয়স ২৩-৫০ বছরের মধ্যে হতেই হবে। সারোগেট মাদার আগে যদি একই কাজ করে থাকেন, তা হলে আর গ্রাহ্য হবে না তাঁর আবেদন। তাঁকেও গর্ভধারণের জন্য মেডিক্যাল ফিট সার্টিফিকেট জমা করতে হবে। সারোগেসি আইনের খসড়া বিলের অন্যতম প্রস্তাবক ও উপদেষ্টা, বিশিষ্ট বন্ধ্যত্বরোগ বিশেষজ্ঞ সুদর্শন ঘোষদস্তিদারের কথায়, ‘‘পশ্চিবঙ্গে সারোগেসি নিয়ে তেমন অনিয়ম দেখা যায় না বললেই চলে। তবে বেনিয়ম যত কম হয় ততই মঙ্গল।’’ সারোগেসি করে সন্তান লাভ আকচার দেখা যায় বলিউডের তারকাদের মধ্যে। প্রীতি জিন্টা, সানি লিওন বা লিজা রে থেকে শিল্পা শেট্টি থেকে অনেক হুজ হু সন্তান পেতে সারোগেসিকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু সেই নিয়ম এই রাজ্যে আর চলবে না। মাতৃত্বের স্বাদ পেতে গেলে ৯ মাস গর্ভধারণ করতেই হবে। এখন থেকে এটাই রাজ্যে বলবৎ হতে চলেছে।