সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: '... খোলা জায়গার শেষ সীমায় একটা বড় বাওবাব গাছ। আফ্রিকার বিখ্যাত গাছ, শঙ্কর কতবার ছবিতে দেখেছে, এবার সত্যিকার বাওবাব দেখে শঙ্করের যেন আশ মেটে না।' বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'চাঁদের পাহাড়' পড়েনি এমন বাঙালি বিরল। আর সেই উপন্যাস পড়ার সময় ভয়ংকর আফ্রিকার অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যে ছবি চোখের সামনে ফুটে ওঠে সেখানে অবশ্যই রয়েছে বাওবাব গাছ। কিন্তু সেই বাওবাবই নাকি বিলুপ্তির পথে! এমনই এক দাবি ক্রমেই জোরালো হয়েছে গত কয়েক বছরে। অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশবিদদের একটি দল। সাম্প্রতিক গবেষণায় সেই দল দাবি করেছে, আফ্রিকান বাওবাব যার বিজ্ঞানসম্মত নাম 'অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা' মোটেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে না। এমন কথায় আশায় বুক বাঁধছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
২০১৮ সালে ‘নেচার প্ল্যান্টস’ পত্রিকায় এক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। সেখানে দাবি করা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫টি প্রাচীন বাওবাবের মৃত্যু হয়েছে। আর সেই মহাবৃক্ষগুলির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে ১০টিই জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। স্বাভাবিক ভাবেই তার পর থেকেই বেড়েছে আশঙ্কা। আসলে বাওবাবের বিরাট অবদান আফ্রিকার বাস্তুতন্ত্রে। এই গাছের পরিচয়ই ‘ট্রি অফ লাইফ’। তাই এর অবলুপ্তি নানা ভাবে প্রভাবিত করবে আফ্রিকার ভূপ্রকৃতিকে এবং এখানকার জীবজগৎকে।
এবার আলোচনায় আর এক গবেষণাপত্র। সম্প্রতি প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রের নাম 'বাওবাবস অ্যাজ সিম্বলস অফ রেসিলিয়েন্স'। যেখানে রীতিমতো প্রমাণ দিয়ে বলা হয়েছে, আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডে বাওবাবের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রাচীন বাওবাব গাছগুলিকেও পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাদের স্বাস্থ্য অটুটই রয়েছে। 'আফ্রিকান বাওবাব অ্যালায়েন্স' নামের এক অলাভজনক সংস্থা এই গবেষণাকে তুলে ধরে দাবি করেছে আফ্রিকায় বাওবাবের স্বাস্থ্যহানিও হয়নি। বরং তারা সংখ্যায় বাড়ছে।