নিজস্ব সংবাদদাতা: ভারত-বাংলাদেশ যৌথ ভাষা উৎসব এবার আর হচ্ছে না।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্ত বন্ধ। কোনও তরফেই ভাষা শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ নেই। ওপারের প্রশাসনের তরফেও কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। বরাবর সীমান্তের এপারে আর ওপারে জিরো পয়েন্টে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। দুই পারেই আসেন দুই পারের বিশিষ্ট মানুষ। শহিদ স্মরণ করে ভাষা দিবসের কর্মসূচি হয়।
এপারে সেই কর্মসূচি একযোগে করে বনগাঁ পুরসভা, বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি ও ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। এবারে পৃথকভাবে প্রশাসনিক নজরদারিতে সেই অনুষ্ঠান করবে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বনগাঁ পুরসভা জানিয়েছে, বনগাঁ থানার পাশে ইছামতীর ধারে বড় করে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। সকালে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে, হবে প্রভাতফেরি। সাইকেলে শহর পরিক্রমা করবে সবুজসাথী, কন্যাশ্রীর মেয়েরা। বিকেলের মূল অনুষ্ঠানে থাকবেন শাসক দলের বিধায়ক, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবারের সদস্য প্রণতী ঠাকুর, নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্য নুপূর কাজী ও লালন ফকিরের ধারার গোলাম ফকির ও তাঁর সদস্যদের। থাকবেন শাসকদলের প্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্তারা। ইছামতীতে শহীদদের স্মরণে ভাসানো হবে হাজার প্রদীপ। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মূল অনুষ্ঠান হবে দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে।
বরাবর এই অনুষ্ঠান হয় পেট্রাপোল আর বেনাপোল, সীমান্তের দুই পারেই, জিরো পয়েন্টে। এবার তা আদৌ করা যাবে কিনা তা জানতে চাওয়া হয় বিএসএফের কাছে। ২০১২ সালে এই কর্মসূচি শুরু হয় তৎকালীন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বে। এবার তা করা যাবে কিনা বিএসএফকে চিঠি দিয়ে জানতে চান জ্যোতিপ্রিয়। বিএসএফ পরিস্থিতির কথা বলে এই কর্মসূচির উদ্যোগ এবার নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তার পরই বনগাঁ পুরসভাও জানিয়ে দেয় তারা মূল অনুষ্ঠান করবে ইছামতীর পাড়ে বনগাঁ থানা ঘাটে। যার সমস্ত দায়িত্ব রয়েছে বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের উপর। সোমবার তাঁর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় ও বিধানসভায় শাসক দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের কথাও হয়। দলের প্রত্যেককে বলে দেওয়া হয়েছে, জিরো পয়েন্টের ধারেকাছেও কেউ যেন না থাকে। কর্মসূচির নামেও ওই এলাকায় যেন কেউ না যায়।
অন্যদিকে, পেট্রাপোলের অনুষ্ঠান নিয়ে বৈঠকে এদিন ছিলেন পেট্রাপোল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক সদস্য ও ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। জানানো হয়েছে, তাদের তরফে এবারও ভাষা দিবস পেট্রাপোল বন্দরে পালিত হবে। ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, "প্রতি বছরের মতো এ বছর পেট্রাপোল বন্দরে ভাষা দিবস পালিত হবে। বেশ কয়েক বছর ধরে দুই দেশের যৌথ অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ বছর আমরা আমাদের অনুষ্ঠান করব। বিএসএফ যদি অনুমতি দেয় তাহলে আমরা দুই দেশেরে নোম্যান্স ল্যান্ডের শহিদ বেদিতে মাল্যদান করব।"