সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে সর্বনাশা সৎসঙ্গে যোগ দিয়ে পদপিষ্ট হয়ে অসংখ্য মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গোটা দেশে। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আহত আরও বহু মানুষ। তবে ধর্মীয়স্থানে পদপিষ্ট হয়ে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মিছিলের ঘটনা প্রথমবার নয়, এর আগে বহুবার এমন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশ। এখনও পর্যন্ত দেশের তীর্থস্থানে পদপিষ্ট হয়ে সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা ৩৪০। একনজরে ফিরে দেখা যাক অতীতের সেই সব কালো অধ্যায়ের দিকে।
১ জানুয়ারি ২০২২: জম্মু ও কাশ্মীরের অত্যন্ত জনপ্রিয় তীর্থস্থান মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে। প্রবল ভিড়ের জেরে মন্দির চত্বরে ব্যাপক হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই ঘটনায় প্রাণ হারান ১২ জন।
১৪ জুলাই ২০১৫: অন্ধ্রপ্রদেশের রাজমুন্দরিতে পুষ্করম উৎসবের প্রথম দিন গোদাবরী নদীর তিরে স্নান উৎসব উপলক্ষে ব্যাপক ভিড় জমে। ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ২৭ জন। আহত হয়েছিলেন আরও ২০ জন।
[আরও পড়ুন: ‘হিংস্র তারাই, যারা…’, রাহুলের ‘হিন্দু’ মন্তব্যে ময়দানে পয়গম্বর বিতর্কে ‘বরখাস্ত’ নূপুর]
৩ অক্টোবর ২০১৪: বিহারের পাটনার গান্ধী ময়দানে আয়োজিত হয়েছিল দশেরা উৎসবে। সেই অনুষ্ঠান দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার সময় ঘটে বিপত্তি। ব্যপক ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩২ জনের। আহত হন ২৬ জন।
১৩ অক্টোবর ২০১৩: মধ্যপ্রদেশের দতিয়া জেলায় রতনগড় মন্দিরের পাশে চলছিল নবরাত্রি উৎসব। সেখানেই গুজব ছড়ায় যে ছোট ব্রিজ পেরিয়ে মন্দিরে আসতে হয়েছে সেটি ভেঙে পড়ছে। আতঙ্ক থেকে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। ঘটনার জেরে প্রাণ হারান ১১৫ জন। আহত হন আরও শতাধিক মানুষ।
১৯ নভেম্বর ২০১২: বিহারের পাটনায় গঙ্গার ঘাটে ছট পুজো চলাকালীন ভেঙে পড়ে এক অস্থায়ী ব্রিজ। এই ঘটনায় গঙ্গাপাড়ে হুড়হুড়ি পড়ে যায়। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ যায় ২০ জনের।
১৪ জানুয়ারি ২০১১: কেরলের ইডুক্কি জেলায় পুলমেডুতে শবরীমালা মন্দির থেকে বাড়ি ফিরছিল তীর্থযাত্রীদের ভিড়। সেই ভিড়ে ধাক্কা মারে এক গাড়ি। এই দুর্ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় তীর্থযাত্রীদের ভিড়ে। তীর্থযাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ঘটনার জেরে প্রাণ হারান ১০৪ পুণ্যার্থী। ওই বছরের ৮ নভেম্বর হরিদ্বারে হর-কি-পোড়ি ঘাটে পদপিষ্ট হয়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়।
৪ মার্চ ২০১০: উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলার রাম জানকী মন্দিরে খাবার ও কাপড় বিলি চলছিল। তা নিতে সেখানে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ। সেখানের তৈরি হয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ৬৩ জন।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৮: রাজস্থানের যোধপুরে চামুণ্ডা দেবীর মন্দিরে হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের গুজব ছড়ায়। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। মর্মান্তিক সেই ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ২৫০ ভক্তের। ওই বছরের ৩ অগাস্ট হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুরে নয়নাদেবীর মন্দিরে উপর থেকে পাথর আছড়ে পড়ার গুজব ছাড়ায়। যার জেরে হুড়োহুড়িতে মৃত্যু হয় ১৬২ জনের।
[আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জবাবি ভাষণে হট্টগোল বিরোধীদের, স্লোগানের মধ্যেই দুর্নীতি-তোষণ নিয়ে সরব মোদি]
২৫ জানুয়ারি ২০০৫: মহারাষ্ট্রের সতারা জেলায় মন্ধেরদেবী মন্দিরে চলছিল বার্ষিক তীর্থযাত্রা। হাজার হাজার মানুষ সরু পাহাড়ি পথে সিঁড়ি ধরে এগোচ্ছিলেন মন্দিরের দিকে। তখনই তখনই ভক্তদের নারকেল ভাঙার জেরে পিছল সিঁড়িতে পা পিছলে পড়ে যান কয়েকজন। এর পর একে অপরের গায়ের উপর পড়তে থাকেন পুণ্যার্থীরা। যার জেরে প্রাণ হারান ৩৪০ জন। দেশে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় এটাই সর্বোচ্চ।
২৭ অগাস্ট ২০০৩: মহারাষ্ট্রের নাসিকে কুম্ভ মেলা চলাকালীন পবিত্র স্নান যাত্রায় ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়।