সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না ইউক্রেন (Ukraine) ও রাশিয়ার যুদ্ধ। এই সংঘাতের ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তৈরি হয়েছে অত্যন্ত জটিল ভূ-কৌশলগত সমীকরণ। একদিকে, কিয়েভের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপ। অন্যদিকে, ভারত ও চিনের মতো দেশগুলি যে মস্কোর দিকেই ঝুঁকে তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে স্কটল্যান্ডের রাস্তায় পরমাণু অস্ত্রবোঝাই ট্রাক দেখা গিয়েছে বলে খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে এবার সন্ধান মিলল ভয়ংকর হার্টল্যান্ড ভাইরাসের, কতটা বিপজ্জনক এই জীবাণু?]
‘ডেইলি মেল’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার ন্যাটোর সদস্য দেশ স্কটল্যান্ডের বৃহত্তম শহর গ্লাসগোর সড়কে একটি কনভয় নজরে এসেছে। যে কনভয়ের মাঝে ছিল চারটি ট্রাক। ওই ট্রাকগুলিতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে দাবি করছে নিউকওয়াচ নামে একটি পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংস্থা। সূত্রের খবর, ওই চারটি ট্রাকের মধ্যে তিনটিতে অন্তত ছ’টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। দক্ষিণ গ্লাসগো সিটি সেন্টার থেকে দেড় কিমি দূরের সড়কে নজরে এসেছে ট্রাকগুলি। সংস্থাটি মনে করছে, ওই অস্ত্রগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে লোচ লং-এ রয়্যাল নেভির অস্ত্রভাণ্ডারে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিউকওয়াচের আশঙ্কা, ন্যাটোর যুদ্ধপ্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে অস্ত্রগুলি জড়ো করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে নিউকওয়াচ সংস্থার সদস্য জেন ট্যালেন্টস বলেন, “আমার মনে হয় ওই কনভয়ে পারমাণবিক অস্ত্রবোঝাই চারটি ট্রাক ছিল। তারমধ্যে প্রতিটি ট্রাকে দু’টি করে পরমাণু বোমা নিয়ে যাওয়া যায়। ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে তিনটি ট্রাকে দু’টি করে মোট ছ’টি পরমাণু বোমা রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কনভয়ে একটি অতিরিক্ত ট্রাক রাখা হয়। কোনও অস্ত্রবোঝাই ট্রাকে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে তখন অতিরিক্ত যানটি কাজে আসে।”
উল্লেখ্য, যুদ্ধের মধ্যেই আগামী শুক্রবার পোল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন রুখতে ন্যাটোর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। সম্প্রতি আমেরিকা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে যদি যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করতেও পিছপা হবে না রাশিয়া। পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা, ইউক্রেনের প্রতিরোধ যদি আরও দীর্ঘ হয়ে ওঠে, তাহলে পশ্চিমী দেশগুলির বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধও শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পুতিন। সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্কট ব্যারিয়ার জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় রাশিয়া সমস্যায় রয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করে রাখার ফলে রুশ সেনার শক্তিক্ষয় ও আধুনিক অস্ত্রভাণ্ডারের ভাঁড়ারেও টান পড়ছে। সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে মস্কো। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতেই পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে।