সুকুমার সরকার, ঢাকা: মাদ্রাসা পড়ুয়া নুসরত জাহান ধর্ষণ মামলায় পুলিশ আধিকারিককে ৮ বছরের জেলের সাজা দিল আদলত। পাশাপাশি তাকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ধর্ষণের পর নুসরতের অভিযোগ না নিয়ে উলটে তাঁর আপত্তিকর ভিডিও ইন্টেরনেটে ছড়িয়ে দেয় ওই পুলিশ অফিসার।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে আনা হয় ফেনির সোনাগাজি থানার প্রাক্তন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। দোষ প্রমাণ হওয়ায় আসামিকে আট বছরে কারদণ্ড দেন বিচারক মহম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ তবে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা। ২০ নভেম্বর এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য আজ তারিখ ধার্য করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজি ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে নুসরতের শ্লীলতাহানি করে। এই ঘটনায় নির্যাতিতার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপরই নির্যাতিতার পরিবারের উপর মামলা তুলে নেওয়ার চাপ বাড়তে থাকে৷ মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায়, গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ বেশ কয়েকদিন যমে-মানুষে টানাটানির পর হাসপাতালেই মারা যান নুসরত৷ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া এবং তদন্তে উদাসীনতার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। নুসরতের পরিবারের দাবি মেনে প্রথমে সোনাগাজি থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বদলি করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সব মিলিয়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সাড়া ফেলে দেয় বাংলাদেশ৷
[আরও পড়ুন: কচুরির সঙ্গে পিঁয়াজ না দেওয়ায় হাতাহাতি, পরিস্থিতি সামলাতে এল পুলিশ]
The post নুসরত হত্যা মামলায় বাংলাদেশের পুলিশ আধিকারিকের ৮ বছরের জেলের সাজা appeared first on Sangbad Pratidin.