সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমরা কি ফিরে যাব পর্দাপ্রথা, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, সতীদাহের পৃথিবীতে? বিশ্বজুড়ে নারীর ক্ষমতায়ণের সোনালি দিনেও এত অন্ধকার কেন? জাত, ধর্মের ধুয়ো তুলে, বোকা বানিয়ে নারী, শিশু, দুর্বলের উপর অত্যাচার আজও অব্যাহত! এমনকী নতুন করে উত্থান হচ্ছে মৌলবাদের। তারই এক জঘন্য নিদর্শন সম্প্রতি দেখা গেল পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় (Ghana)। সেখানে ৬৩ বছরের বৃদ্ধ পুরোহিত বিয়ে করলেন ১২ বছরের এক নাবালিকাকে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সোশাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল। একদল যখন এই ঘটনার নিন্দায় মুখর। অন্যদলের বক্তব্য, পৌরানিক প্রথা সম্পর্কে ধারণা নেই বলে নিন্দা হচ্ছে।
সোশাল মিডিয়ার সৌজন্যেই প্রকাশ্যে এসেছে নুমো বোরকেতে লয়েহ সুরু XXXIII-র বিয়ের পোস্ট। এই নুমো ঘানার একটি সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী পুরোহিত। পোস্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, ঘানার বিবাহ আইনকে (মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ১২ বছরের কিশোরীকে বিয়ে করেছেন বৃদ্ধ পুরোহিত। ছবিতে দেখা গিয়েছে, রীতিমতো ঘটা করে যাবতীয় প্রথা মেনে বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজের মান্যরাও।
[আরও পড়ুন: চিনের আগ্রাসনের সাক্ষী মেষপালকরা, লাদাখবাসীর গতিবিধিতে বেড়ি]
এখানেই শেষ নয়, বুড়ো স্বামীর 'কাম' বৃদ্ধিতে নাবালিকাকে সুগন্ধি মাখার নিদান দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। সেই মতো সাজিয়ে, সুগন্ধী মাখিয়ে বৃদ্ধ পুরোহিতের সমানে হাজির করানো হয় কিশোরীকে। স্বাভাবিকভাবেই সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট হুড়মুড় করে ভাইরাল হয়। কাণ্ড দেখে সমালোচনায় সরব হয় গোটা বিশ্বের নেটিজেনরা। ঘানার বহু মানুষ বেআইনি এই কাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। অনেকে এই প্রথা তুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
[আরও পড়ুন: মোদির সমালোচনায় ছিলেন সরব, এবার কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতেই বিজেন্দর সিং]
একদিকে যখন বাল্যবিবাহের এই ঘটনায় তুমুল নিন্দা হচ্ছে, সেই সময় ওই সম্প্রদায়ের হত্তাকর্তাদের দাবি, তাদের প্রথা এবং ঐতিহ্য বোঝার ক্ষমতা নেই সকলের। ছয় বছর বয়স থেকেই নাবালিকাকে পুরোহিতের স্ত্রী করার আচার শুরু হয়েছিল। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত বৃদ্ধের 'গোরবু উলোমো' উপাধিও রয়েছে। এই উপাধির বলেই তিনি সমাজের একজন উচ্চ বর্ণের পুরোহিত।তবে কিনা নেটিজেন সোচ্চার হওয়ায় খানিক কাজ হয়েছে। ঘানা পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে সে এবং তার মা প্রশাসনের নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। যদিও বৃদ্ধ পুরোহিতের বিরুদ্ধে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়ার খবর নেই।