সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাস চালকের দৌরাত্ম্যের কথা হয়ত অনেক শুনেছেন। কিন্তু ৩০-৪০ জন যাত্রীর প্রাণ যাঁর হাতে, তাঁর দায়িত্বও নেহাত কম নয়। সেই কর্তব্য পালনের ছবিটাই এবার ধরা পড়ল বিহারের মুজফফরপুরে। চলন্ত বাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও কর্তব্য ভোলেননি, নিশ্চিত দুর্ঘটনায় হাত থেকে ৩০ যাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বাস চালক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে মুজফফরপুরে।
বিহারের কিষাণগঞ্জ থেকে মুজফ্ফরপুর এবং হাজিপুর হয়ে পটনা যাচ্ছিল একটি বাস। ৩০ জন যাত্রী নিয়ে হাইওয়ে ধরে তীব্র গতিতে ছুটছিল বাসটি। পথে মুজফফরপুর বালিয়া এলাকায় এক উড়ালপুলে ওঠার সময় হঠাৎ বুকে প্রবল ব্যথা অনুভব করেন চালক। স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রণ হারায় বাসটি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। ওই অবস্থাতেই কোনওমতে বাসটিকে রাস্তার ধারে এনে ব্রেক কষেন চালক। এর পরই জ্ঞান হারান তিনি। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর ছিল যে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে বড় সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তবে শেষ মুহূর্তেও চালকের তৎপরতায় দুর্ঘটনা এড়ানো সক্ষম হয়।
বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড় করানোর সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন চালক। বাস থামার পর বাস থেকে নেমে চালককে উদ্ধার করা হয়। জড়ো হয়ে যান স্থানীয়রা। তাঁদের উদ্যোগে চালককে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, পাটনার মিঠাপুরের বাসিন্দা মৃত বাস চালকের নাম মুন্না নেপালি। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, বাসের সকল যাত্রীরা সুস্থ রয়েছে। বাসটির কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যাত্রীদের গন্তব্যে পাঠাতে দ্রুত অন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি চালকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তবে মৃত্যুর আগে ৩০ যাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়ে যাওয়ায় ওই বাস চালককে কুর্নিশ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। শেষ মুহূর্তেও নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকায় মৃত চালকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন যাত্রীরা।