জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: পুলিশ হওয়ার শখ তাঁর অনেক দিনের। সেজন্য পুলিশের পোশাক পরে ঘোরাফেরা। নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয়ও দিতেন ওই যুবক। জানাতেন সল্টলেকের বিকাশ ভবনে তিনি 'পোস্টিং' আছেন। সোশাল মিডিয়ায় একাধিক ছবিও আপলোড করতেন পুলিশের পোশাকে। ঘটনার কথা কানে যায় পুলিশ আধিকারিকদের। অবশেষে আসল পুলিশের হাতে পাকড়াও 'নকল' পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গাইঘাটা থানা এলাকায়। ধৃত ওই যুবকের নাম অঙ্কিত ঘোষ, বাড়ি গাইঘাটা থানার শিমুলপুর চৌরঙ্গী এলাকায়। এক বছর ধরে 'পুলিশ' পরিচয়ে তিনি এলাকায় ঘুরছিলেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি গাইঘাটা থানার আধিকারিকদের কাছে খবর আসে এক যুবক পুলিশের পোশাক পরে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিজেকে পুলিশ বলে এলাকায় পরিচয় দিতেন তিনি। শুধু তাই নয়, সোশাল মিডিয়ায় পুলিশের পোশাক পরে একাধিক ছবিও আপলোডও করা হত। একাধিক তথ্য পাওয়ার পর গাইঘাটা থানার পুলিশ শিমুলপুর চৌরঙ্গী এলাকায় ওই যুবকের বাড়িতে হানা দেয়। অঙ্কিত কোথায় কাজ করেন, তিনি কী পোস্টে আছেন? সেসব প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু ওই যুবকের কথায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। গাইঘাটা থানার আধিকারিকরা পুলিশে চাকরির কাগজপত্র দেখতে চান। কিন্তু নিয়োগপত্র কিছুই দেখাতে পারেননি তিনি। তারপরই সন্দেহ আরও গাঢ় হয় গাইঘাটা থানার আধিকারিকদের। একাধিক প্রশ্নের সামনে পড়ে শেষপর্যন্ত সত্য বেরিয়ে পড়ে।
জানা যায়, অঙ্কিত আদপে পুলিশকর্মীই নন। কোথাও কাজও করেন না। কিন্তু পুলিশের পোশাক পরে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন। পরিবারের সদস্যদের অঙ্কিত জানিয়েছিলেন, তিনি পুলিশের পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। সল্টলেক বিকাশভবনে তিনি পোস্টিং রয়েছেন। ছেলের কথা সহজেই বিশ্বাস করেছিলেন পরিবারের অন্যান্যরা। ছেলে পুলিশ বলে পরিবারের লোকজন গর্বও করতেন। ছেলের এই কীর্তি দেখে হতবাক পরিবারের লোকজনও। গাইঘাটা থানার পুলিশ আধিকারিকরা ওই বাড়ি থেকে একাধিক পুলিশের পোশাক, নেমপ্লেট-সহ একাধিক ভুয়ো নথি উদ্ধার করেন। তারপরই মঙ্গলবার অঙ্কিতকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেবলই কি পুলিশ হওয়ার নেশা? নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল ধৃত যুবকের? সেই বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
