সুকুমার সরকার, ঢাকা: চালের মতোই পিঁয়াজের জন্যও ভারতের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। তাই ভারতে পিঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে| সে দেশের বাজারে প্রতি কেজি পিঁয়াজের দাম এখন ১২০ টাকা। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ বা টিসিবি’র হিসেবেও প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজের এই দামের কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। লাগামহীনভাবে পিঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মাথায় হাত। গত বছর এই সময়ে প্রতি কেজি পিঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় পিঁয়াজের উৎপাদন ও আমদানি দুটোই বেড়েছে। তাহলে কেন বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই কৃষিপণ্যের দাম?
[সরকার পাঠাচ্ছে খাদ্যসামগ্রী, কোন চক্র উধাও করছে রেশনের চাল-গম?]
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেছেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে পিঁয়াজের সরবরাহ কম। বিশেষ করে ভারত পিঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি করায় দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পিঁয়াজের বাজারে রীতিমতো ‘আগুন’ লেগেছে। দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই পিঁয়াজের রপ্তানি মূল্য এক লাফে টন প্রতি ৩৫২ মার্কিন ডলার বাড়িয়েছে ভারত। যার প্রভাবেই বাংলাদেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। টিসিবির হিসেবেই রাজধানীতে বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানিকৃত পিঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও দেশি পিঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। অথচ এক সপ্তাহ আগেও আমদানিকৃত পিঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা ও দেশি পিঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সরকারি সংস্থাটির হিসেবে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে আমদানিকৃত পিঁয়াজের দাম ৩০.৭৭ শতাংশ ও দেশি পিঁয়াজ ৩৯.৩৯ শতাংশ বেড়েছে। আর গত এক বছরের ব্যবধানে দেশি পিঁয়াজের দর ২০৯ শতাংশ আর আমদানিকৃত পিঁয়াজ ২০৭ শতাংশ বেড়েছে।
[রাজস্থানের ঘটনা এখানে হলে বিজেপি নেতাকে পুড়িয়ে মারতাম: অনুব্রত]
বাণিজ্য মন্ত্রকের হিসাবে, দেশে বছরে ২২ থেকে ২৪ লাখ টন পিঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বা বিবিএস-এর হিসাবে, ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে দেশে ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টন পিঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার টন বেশি। আর বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের হিসাবে, ওই সময়ে দেশে ১০ লাখ ৪১ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার টন বেশি। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে পিঁয়াজের যোগান এসেছে প্রায় ২৯ লাখ টন। যা চাহিদার চেয়ে ৭ লাখ টন বেশি। তারপরও বাড়ছে পিঁয়াজের দাম। গত ২৩ নভেম্বর প্রতি টন পিঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৮৫২ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে ভারতের কৃষিজাত কাঁচামালের মূল্য নির্ধারক সংস্থা ন্যাফেড। এক লাফে ৩৫২ ডলার দাম বাড়ার পর থেকেই ভারতের পড়শি মুলুকটিতে পিঁয়াজের বাজারে রীতিমতো ‘আগুন’ লেগেছে।
[কিমের ক্ষেপণাস্ত্র থামানোর মহড়ায় নামল আমেরিকা, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া]
The post পিঁয়াজের ঝাঁজে নাকাল বাংলাদেশ, ১ কেজির দাম ১২০ টাকা! appeared first on Sangbad Pratidin.