সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছাইদানার মতো বস্তু উড়িয়ে দেখেই অমূল্য রতন খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে কতশত দূরের এক গ্রহাণু (Asteroid) থেকে সংগৃহীত নমুনা, তা থেকে নিশ্চয়ই তাৎপর্যপূর্ণ কোনও বস্তু মিলবে। কিন্তু নাহ, সে আশায় খানিকটা জল ঢেলে দিল জাপানি মহাকাশযান হায়াবুসা-২’র (Hayabusa 2) ক্যাপসুলে ভরতি দানা। গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চারকোল অর্থাৎ কার্বনের অংশবিশেষ ছাড়া কিছুই পেলেন না বিজ্ঞানীরা।
গত বছর থেকে অভিযান শুরু করেছিল হায়াবুসা-২। ২০১৯এ যাত্রা শুরু করে চলতি বছরে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৯০ মিলিয়ন মাইল দূরের গ্রহাণু রায়াগুর (Ryugu) দুটি অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল। সৌর বিকিরণে যাতে জাপানি মহাকাশযানের কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য রায়াগুর বিশেষ অংশে গিয়ে সেই কাজ করেছিল জাপানি মহাকাশযানটি। দু’ধাপে সেখান থেকে নমুনা নিয়ে নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরে হায়াবুসা-২। তারপর সেখানকার ক্যাপসুল থেকে কফিদানার মতো বেশ কিছু টুকরো পদার্থ বের করেন বিজ্ঞানীরা, যার রং ছিল কালচে।
[আরও পড়ুন: পোর্টেবল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানিয়ে সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে ফের সেরা হুগলির অভিজ্ঞান]
সেসব গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা যায়, চারকোল ছাড়া তা কিছু নয়। সবচেয়ে বড় অংশটি ১ সেন্টিমিটার লম্বা, অত্যন্ত শক্ত চারকোল টুকরো, যা একেবারেই ভঙ্গুর নয়। মহাজাগতিক বস্তু সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ তোমোহিরো উসুইয়ের কথায়, ”পরীক্ষার ফলাফল থেকে আরেকটা সম্ভাবনার কথা আমরা আঁচ করছি। হতেই পারে, বড় কোনও প্রস্তরখণ্ড ভেঙে এই চারকোল দানাগুলোর জন্ম হয়েছে। আর আমাদের যানের ক্যাপসুল ওই দানাই সংগ্রহ করতে পেরেছে।” অর্থাৎ তাঁর আশা, রায়াগুতে হয়ত শুধুই চারকোল নেই। এই চারকোল অর্থাৎ কার্বনজাত যৌগ বিবর্তনের ফসল।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন মহাকাশ স্টেশনে বসবাস, একঘেয়েমি কাটাতে নতুন বছর পৃথিবীতে ফিরতে মরিয়া নভোশ্চর]
অথচ হায়াবুসা-২’র সংগৃহীত এই নমুনা নিয়ে অনেক আশা ছিল জাপানি বিজ্ঞানীদের। এসব থেকে সৌরজগতের আদিকালের একটা ধারণা পেতে পারেন বলে মনে করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু আপাতত কঠিন চারকোল দানা থেকে সে সম্ভাবনা নেই। ফলে, হায়াবুসা-২ যত বড় কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছিল, পরবর্তী কাজ আর ততটা সাফল্যমণ্ডিত হল না।