shono
Advertisement

ভোট আসে, ভোট যায়, কাঁটাতারেই আটকে সুমি-নাসিফাদের জীবন

ভোটের মুখে সীমান্তে বাড়ছে প্রহরা, কাঁটাতারে শ্লথ দৈনন্দিন জীবনের গতি। The post ভোট আসে, ভোট যায়, কাঁটাতারেই আটকে সুমি-নাসিফাদের জীবন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:57 PM Apr 14, 2019Updated: 08:57 PM Apr 14, 2019

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: হাসি, সুমি, নাসিফা, মুকলিমা। কেউ অষ্টম, কেউ বা দশম শ্রেণিতে পড়ে। নাবালিকা এই কন্যারা ভারতীয় হয়েও কাঁটাতারের জালে আজও বন্দি৷ বাড়ি এপারে, স্কুল ওপারে৷ ভোট এসেছে, সীমান্তে প্রহরাও বেড়েছে৷ এবার তাই প্রতিদিন স্কুলছুটির পর বেশ খানিকক্ষণ কাঁটাতারের সীমান্তে অপেক্ষা করতে হয় এদের৷ নাকা চেকিং শেষে কখন দরজা খুলবে, তবে ঘরে ফিরবে৷আর পাঁচজন ছাত্রছাত্রী যখন স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে খায়, সেসময় ওরা খিদে পেটে কাঁটাতারের ওপারে চড়া রোদে ঝিম ধরে বসে থাকে। অপেক্ষা করে। কখন হবে সময়? এক ঘন্টা নাকি দু’ঘণ্টা। গেট খুললে তবে ওরা ঘরে ফিরতে পারে।

Advertisement

                                                 [ আরও পড়ুন: আবারও ইসলামপুরকে ‘ঈশ্বরপুর’ করার দাবি, বিতর্কে ভিএইচপির হোর্ডিং]

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তেহট্ট বিধানসভার ১৭২ নং বুথের অন্তর্গত এই এলাকা। ১২৬৯ জন ভোটার রয়েছে এখানে। তেহট্টর বেতাই বিষ্টুগঞ্জে কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডের মুসলিম পাড়ায় রয়েছে ৬৯টি পরিবারের প্রায় সাড়ে চারশো সদস্য। যার মধ্যে তিনশো জনেরও বেশি ভোটার৷ বছর ১৭ আগে অর্থাৎ ২০০২ সাল থেকে এখানে ফেন্সিং দেওয়ার কাজ শুরু হয়। তারপরই ভারতীয় ভূখণ্ডের ৯৩টি পরিবার কাঁটাতারের ওপারে চলে যায়। ওপার থেকে প্যান, ভোটার কার্ড দেখিয়ে জমিতে চাষ, বাজার-সহ একাধিক কাজ সারতে এপারে আসতে হয়। সকাল ছ’টা থেকে সাড়ে আটটা, আড়াই ঘন্টা গেট খোলা থাকার পর দু’ঘন্টা বন্ধ। এভাবেই দু’ঘন্টা পরপর গেট খোলা, বন্ধ করে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ একেবারে গেট বন্ধ হয়ে যায়।

                                                  [আরও পড়ুন: ‘ভোট গোপাল’ ও সোমা বিশ্বাসের হাত ধরে নদিয়ায় ভোটপ্রচার]

২০০৩ সালে বিষ্টুগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এপারে নিয়ে আসা হয়। এই স্কুলের বুথেই হয় ভোট। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে জিরো পয়েন্ট থেকে দেড়শো মিটার দূরে ফেন্সিং রয়েছে। কাঁটাতার, গেট পেরিয়ে মুসলিম পাড়াতে ঢুকতেই দেখা যায় ইটের রাস্তা আর ছোট টিন বা টালির ঘর। রয়েছে বিশাল বটগাছ। প্রবল গরমে গাছের তলাতেই গ্রামবাসীদের জমায়েত৷ ভোটের আঁচ এখানে রয়েছে। কিছুটা অভিযোগের সুরে তাঁরা জানাচ্ছেন, নেতারা প্রতি ভোটে আসে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়। কাজের কাজ কিছু হয় না৷ তাঁদের আরও অভিযোগ, ভাগাভাগির জটিলতায় বাড়ির মেয়ের বিয়ে হয়েছে অন্য জায়গায়। সে বাপের বাড়িতে থাকবে কি না, তার জন্যও বিএসএফ কমান্ড্যান্টের অনুমতি করিয়ে আনতে হয়।

                                                    [আরও পড়ুন: রাম নবমীর মিছিলে ভোটপ্রচার তৃণমূলের, উঠল মোদি বিরোধী স্লোগান]

অসুস্থ বা প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার জন্যও প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। এমনকী স্কুলে পড়া হাসি, সুমি, নাসিফা, মল্লিকা, মুকলিমাদের মতো সাতাশজন পড়ুয়াকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যাওয়া, স্কুলের পরীক্ষা, শনিবার বা হাফ ছুটি হওয়া দিনগুলিতে গেট খোলা-বন্ধের অপেক্ষায় থাকে তারা৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী আশিস বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা এই সমস্যাগুলো বারবার বিএসএফ কর্তাদের জানিয়েছি। সমাধান হয়নি।’ ঘটনা প্রসঙ্গে তেহট্টের এক নম্বর ব্লকের বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠক বলেন, ‘এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। আমি ওখানে গিয়েছি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। তাই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি রয়েছে। এখন একটু কড়াকড়ি চলছে। এর মধ্যেই বিএসএফের সঙ্গে বসা হবে। তখন এই বিষয়টি আমি তুলব।’

The post ভোট আসে, ভোট যায়, কাঁটাতারেই আটকে সুমি-নাসিফাদের জীবন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement