সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কবে আসবে কোভিড ভ্যাকসিন? আপাতত সেই অপেক্ষাতেই সারা বিশ্ব। গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত মহামারীর ভ্যাকসিন না আসছে ততক্ষণ করোনার (Coronavirus) সঙ্গে আমাদের লড়াই থামালে চলবে না। এই পরিস্থিতিতে সাবধানতাকেই প্রধান হাতিয়ার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, নির্দিষ্ট কিছু মাউথওয়াশ (Mouthwash) ও ওরাল অ্যান্টিসেপ্টিকের মধ্যে করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। আমেরিকার পেন স্টেট কলেজ অফ মেডিসিনের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই দাবি।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিছু কিছু মাউথওয়াশ বা ওরাল অ্যান্টিসেপ্টিক ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা কমাতে পারে। এবং সম্ভবত এদের ক্ষমতা রয়েছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া আটকানোর। মাইক্রো বায়োলজির বিশিষ্ট অধ্যাপক ক্রেগ মেয়ার্সের নেতৃত্বে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের একটি দল গবেষণা চালিয়েছে হিউম্যান করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে। এই ভাইরাসের সঙ্গে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের পুরোপুরি গঠনগত সাদৃশ্য রয়েছে।
[আরও পড়ুন: সারাদিনে ৫ ঘণ্টারও কম ঘুমোচ্ছেন? সাবধান, আপনার শরীরে হামলা চালাতে ওঁৎ পেতে বসে করোনা]
গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অফ মেডিক্যাল ভাইরোলজি’-তে। তাতে বলা হয়েছে, সংক্রমণের পরে মুখের মধ্যে ভাইরাসের পরিমাণকে কমাতে সক্ষম এগুলি। পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে, সম্ভবত সার্স-কোভ-২-কেও আটকাতে পারবে এরা। ক্রেগ মেয়ার্সের কথায়, ‘‘ভ্যাকসিনের জন্য যখন আমাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকানোর পদ্ধতিগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে সব সামগ্রী আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি তারা অনায়াসে লভ্য এবং ইতিমধ্যেই বহু মানুষের দৈনন্দিন রুটিনের সঙ্গে যুক্ত।’’
হিউম্যান করোনা ভাইরাসের স্ট্রেনের উপরে যে দ্রবণগুলি প্রয়োগ করা দেখা হয়েছে তাতে রয়েছে বেবি শ্যাম্পুর দ্রবণ, নানা পারক্সাইড অ্যান্টিসেপ্টিক দ্রবণ ও নানা ব্র্যান্ডের মাউথওয়াশ। ভাইরাসের উপরে ৩০ সেকেন্ড, এক মিনিট ও দু’মিনিট প্রয়োগ করা হয় এই দ্রবণগুলি। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বেবি শ্যাম্পুর দ্রবণের ১ শতাংশ দু’মিনিটে ৯৯.৯ শতাংশ হিউম্যান করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে পেরেছে। একই ভাবে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম মাউথওয়াশও। দেখা গিয়েছে, ৩০ সেকেন্ডের আগে কিংবা পরে বহু মাউথওয়াশই নিষ্ক্রিয় করে ফেলতে পেরেছে হিউম্যান করোনাভাইরাসকে।
[আরও পড়ুন: বাতিল হতে পারে চারটি পরিচিত ওষুধ! করোনা চিকিৎসার পদ্ধতিতে বদলের ভাবনা কেন্দ্রের]
মেয়ার্স জানিয়েছেন, তাঁদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে এবিষয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো। তবেই এবিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে যে, সত্যিই মাউথওয়াশ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর শরীরে ভাইরাসের পরিমাণকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে কিনা।