সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে জ্যাভলিনে সোনা জিতেছেন পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত পাক মুলুক। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ, সবাই চর্চা করছেন আর্শাদ নাদিমকে নিয়ে।
এই নজিরবিহীন সাফল্যের জন্য আর্শাদ নাদিমকে বিশাল আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়াম নওয়াজ পাকিস্তানি মুদ্রায় দশ কোটি আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আর্শাদ নাদিমের জন্য।
[আরও পড়ুন: ‘যে সোনা জিতেছে সেও আমারই ছেলে’, আর্শাদকে ভালোবাসায় ভরালেন নীরজের মা]
অলিম্পিকে সোনাজয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ারের বাড়ি খানেওয়ালে স্পোর্টস সিটি তৈরি করা হবে।
কথিত রয়েছে, পাকিস্তান ফাস্ট বোলারদের জন্ম দেয়। একসময়ে অলিম্পিক সোনাজয়ী আর্শাদ নিজেও ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁদের পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিল না। নাদিমের বাবা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। দৈনিক চারশো-পাঁচশো টাকা পেতেন। তাঁর মতো পরিশ্রম যাতে ছেলেকে করতে না হয়, সেই দিকে নজর দেন নাদিমের বাবা। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় নাদিম। অভাবের সংসারে প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার জোগাড় করতেই সমস্যা হত। বছরে একবারই মাংস জুটত তাঁর। জ্যাভলিন থ্রোয়ে শারীরিক শক্তির উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। সুঠাম শরীর তৈরি করার জন্য পুষ্টিকর খাবার দরকার ছিল। সেগুলোর জোগান দেওয়া কঠিন ছিল সেই সময়ে। ছেলের সোনা জয়ের পরে পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন আর্শাদ নাদিমের বাবা।
একসময়ে একটা জ্যাভলিন কেনারও সামর্থ্য ছিল না আর্শাদের, বিপদে পাশে দাঁড়ান নীরজই। সোনা জেতার পরে প্যারিস থেকে আর্শাদ নাদিম তাঁর মা-বাবাকে ফোন করেছিলেন। সংবাদসংস্থাকে নাদিমের বাবা মহম্মদ আর্শাদ বলেন, ''গ্রাম্য এলাকায় একটা স্পোর্টস অ্যাকাডেমি তৈরি করার বাসনা রয়েছে নাদিমের।''
ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্যের পরে নাদিমের পরিবার একটুও বিশ্রাম নিতে পারেননি। তাঁদের বাড়িতে স্থানীয় মানুষের ঢল নামে। সবাই অভিনন্দন জানান। আর্শাদ নাদিমের ভাই মহম্মদ আজিম বলেছেন, ''পাঞ্জাবের গ্রামীণ এলাকার যুবকরা শারীরিক দিক থেকে দারুণ শক্তিশালী। তাদের ঠিকঠাক গাইডেন্সের দরকার। আশা রাখি ভাইয়ের পারফরম্যান্স পরিস্থিতির পরিবর্তন করবে।''
একটা সোনা জেতার পরে পাকিস্তানের সবাই মনে করছেন, দেশের খেলাধুলোর মানচিত্র বদলাবে।