সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৬ সোনা। ১৩ রুপো। ১৮ ব্রোঞ্জ। মোট ৪৭ পদক নিয়ে এবারের জাতীয় গেমসে অষ্টম হল বাংলা। যে পারফরম্যান্সকে বাংলার সর্বকালের সেরা বলছেন রাজ্যের প্রবীণ ক্রীড়াকর্তারা। একই মত বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চন্দন রায়চৌধুরীর। তাঁর কথায়, “এর আগে গেমসের কোনও আসরে ১৬ সোনা জয় বা প্রথম দশে থাকার মতো পারফরম্যান্স বাংলা করছে বলে মনে পড়ছে না। আমরা বাংলার ক্রীড়াবিদদের এই সাফল্যে খুবই খুশি। জিমন্যাস্টিক্স, টেবল টেনিসে দুর্দান্ত ফল হয়েছে। জুডোর মতো খেলায় দীর্ঘদিন পর আমরা পদক পেলাম। আশা করছি, এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে আগামী দিনেও।”
বৃহস্পতিবার গেমসের শেষদিনে তিনটি সোনা আর একটি রুপো এসেছে বাংলার ঝুলিতে। এরমধ্যে একটি টেবল টেনিসে, মিক্সড ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয় অনির্বাণ ঘোষ ও ঐহিকা মুখোপাধ্যায়ের জুটি। ফাইনালে দুরন্ত কামব্যাক করে চ্যাম্পিয়ন হন তাঁরা। মহারাষ্ট্রের চিন্ময় সোমানিয়া ও রিথ রিষ্যার বিরুদ্ধে প্রথম দু’টো গেম ১০-১২, ৬-১১ ব্যবধানে হেরে যান অনির্বাণ-ঐহিকা। কিন্তু পরের তিনটে গেমে ১১-৭, ১১-৮, ১১-২ ব্যবধানে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে সোনা জেতেন তাঁরা। যে জয় প্রসঙ্গে অনির্বাণ বলছিলেন, “আমি আর ঐহিকা ছোটবেলা থেকেই বন্ধু। দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলছি। ফলে আমাদের বোঝাপড়া বেশ ভালো। সেটাই আজ সোনা জিততে সাহায্য করেছে।” এর আগে টিম ইভেন্টেও সোনা জিতেছেন তাঁরা। জোড়া সোনার সাফল্যের মধ্যেও অনির্বাণের আক্ষেপ সিঙ্গলসের ফল নিয়ে। কাঁধের চোটের জন্যই সেখানে কোয়ার্টার ফাইনালে হারতে হয়েছিল বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “সেসময় যা পরিস্থিতি ছিল, কোনও একটা ইভেন্টেই ফোকাস করতে পারতাম। আমাদের মিক্সড ডবলসে সোনা জেতার সম্ভাবনা বেশি ছিল। তাই এই ইভেন্টেই বেশি জোর দিয়েছিলাম।”
এদিন বাংলার ঝুলিতে বাকি দু’টি সোনা এবং একটি রুপো আসে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে। ব্যালেন্স বিমে ঋতু দাস এবং ফ্লোর এক্সারসাইজে প্রণতি দাস সোনা জেতেন। ফ্লোরে রুপো পান বাংলার প্রতিষ্ঠা সামন্ত। সব খেলার মধ্যে জিমন্যাস্টিক্সেই বাংলার পারফরম্যান্স সবচেয়ে উজ্জ্বল। আর্টিস্টিক, অ্যারোবিক এবং অ্যাক্রোব্যাটিক মিলিয়ে মোট পাঁচটি করে সোনা ও রুপো এবং দু’টি ব্রোঞ্জ এনেছেন বঙ্গ জিমন্যাস্টরা। এরমধ্যে উজ্জ্বলতম প্রণতি। সবমিলিয়ে তিনটি সোনা এবং একটি রুপো নিয়ে অভিযান শেষ করলেন তিনি। কয়েকদিন আগে অলরাউন্ড ইভেন্টে রুপো পেয়ে আক্ষেপ করছিলেন তিনি, ফ্লোরে কম পয়েন্ট পাওয়া নিয়ে। ঘটনাচক্রে সেই ফ্লোরেই চলতি গেমসে নিজের তৃতীয় সোনাটা জিতলেন তিনি, ১১.৮৬৭ পয়েন্ট স্কোর করে। প্রণতির কথায়, “এই নিয়ে জাতীয় গেমসে টানা দু’বার ফ্লোরে সোনা জিতলাম। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও শেষ তিনবারের চ্যাম্পিয়ন আমি। অলরাউন্ড ইভেন্টে ফ্লোরের ফল আমার মনমতো হয়নি। ফলে আজকে সোনা জিতে বেশিই ভালো লাগছে।” ব্যালেন্স বিমে সামান্য ভুলের জেরে পোডিয়ামে ওঠা হয়নি প্রণতির।
