প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগির হিসেবে নজির গড়েছিলেন সাক্ষী মালিক। এখন তিনি অবসরে। স্বামী, সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করছেন। কিন্তু কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে তাঁর এবং তাঁর সতীর্থদের দীর্ঘ আন্দোলনে এদেশের কুস্তির 'কলঙ্কে'র ছবিটা কি বদলাল? একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তারকা কুস্তিগির। শুনলেন সুলয়া সিংহ।

প্রশ্ন: কুস্তি ফেডারেশনের অন্দরের জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে যে প্রতিবাদ করলেন, তাতে কি সত্যিই কোনও বদল এল?
সাক্ষী: দেখুন, একদিনে তো সবকিছু বদলে যায় না। নিশ্চিতভাবে পরিবর্তন আসবে। তবে ধীরে ধীরে। আমাদের প্রতিবাদ হয়তো সর্বতভাবে সফল হয়নি। কিন্তু মহিলাদের আমরা এটা বোঝাতে পেরেছি যে, যদি আপনার সঙ্গে খারাপ কিছু হয়, তাহলে সরব হতে হবে। আমাদের এই আন্দোলন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। রুখে দাঁড়াতে অনেককেই অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাই এখন যারা অন্যায় করে, তারা ভয়ে ভয়ে থাকে যে তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হতে পারে। সেটাই আমাদের সাফল্য।
প্রশ্ন: আপনি চেয়েছিলেন ফেডারেশনের মসনদে কোনও মহিলা বসুন। যিনি মহিলা কুস্তিগিরদের সমস্যা বেশি ভালোভাবে বুঝবেন। কিন্তু আপনাদের জন্য তৈরি হওয়া অ্যাডহক কমিটিতে মহিলা থাকা সত্ত্বেও সমাধানের পথ মেলেনি। এমনটা কেন হল?
সাক্ষী: হ্যাঁ, ঠিকই। অ্যাডহক কমিটিতে একাধিক মহিলা সদস্য ছিলেন। তাঁরা আমাদের সমস্যার কথা শুনেওছিলেন। কিন্তু কেন তার ফল পেলাম না, সেটা সত্যিই জানি না। তবে আমি এখনও চাই ফেডারেশনের মাথায় কোনও মহিলা আসুন। তাহলে মেয়েরা অনেক বেশি নিরাপদে থাকতে পারবে। নিজেদের মনের কথা জানাতে পারবে।
প্রশ্ন: প্যারিস অলিম্পিকে ওজন বেশি থাকায় পদক হাতছাড়া হয়েছিল ভিনেশ ফোগাটের। যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়। আপনি কি এর মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখেন?
সাক্ষী: প্রথমেই বলব, আমি ওখানে ছিলাম না। তবে ভিনেশ যে ওর ১০০ শতাংশ দিয়েছিল, তা নিয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই। ওর হাতে এসেও রুপো বেরিয়ে গিয়েছে। একজন অ্যাথলিট হিসেবে এটা কতখানি দুঃখজনক, সেটা আমি বুঝতে পারি। কিন্তু ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে বলব, ইউডব্লিউডব্লিউর নিয়মই এটা। কারও ১০ গ্রাম ওজন বেশি থাকলেই তাকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেওয়া হয়। তাই আমার মনে হয় না কোনও ষড়যন্ত্র ছিল।
প্রশ্ন: আপনার প্রতিবাদের অন্যতম সঙ্গী ভিনেশ ফোগাট রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। আপনিও কি সে পথেই এগোবেন? রাজনীতিই কি প্রতিবাদের ভাষা আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে?
সাক্ষী: রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ভিনেশের সম্পূর্ণ নিজস্ব সিদ্ধান্ত। ওর হয়তো মনে হয়েছে রাজনীতির আঙিনা থেকেই আরও সোচ্চার হওয়া যাবে। তবে আমার আপাতত এমন কোনও ইচ্ছা নেই। আমি এখন আথলিটদেরই উৎসাহ দিতে আগ্রহী। কুস্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তাই রাজনীতি নিয়ে কিছু ভাবছি না।