সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। লাগামছাড়া সন্ত্রাসবাদ। আইনশৃঙ্খলার শাসন রয়েছে ‘নাম কা ওয়াস্তে’। আণবিক অস্ত্রে বলীয়ান ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ পাকিস্তানের ছবি আজ সত্যিই ভীতিপ্রদ। এহেন পরিস্থিতিতেও রাষ্ট্রসংঘে কাশ্মীর নিয়ে গলাবাজি করছে ইসলামাবাদ। পড়শি দেশটির দাবি, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। পালটা মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ভারতের তোপ, ‘কীভাবে গণহত্যার দায় এড়ানো যায় পাকিস্তান-ই তার প্রমাণ।’
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক আইন অবমাননায় দায়বদ্ধতা ও বিচার ব্যবস্থা মজবুত করা নিয়ে আলোচনা হয়। আলবানিয়ার নেতৃত্বে হওয়া ওই আলোচনায় কাশ্মীর নিয়ে সরব হন পাকিস্তানের কার্যনির্বাহী স্থায়ী প্রতিনিধি আমির খান। তাঁর অভিযোগ, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা হচ্ছে সেখানে। ভারতকে নিশানা করে পাক দূত বলেন, “দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লাগু করার বিষয়ে দ্বিচারিতা করা হচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।” তাঁর বক্তব্য, “কাশ্মীর উপত্যকায় কয়েক দশক ধরে প্রায় ৯ লক্ষ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ভারত। তারা ধর্ষণের মতো অমানবিক অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের অবমাননা করে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হয়েছে। সেখানে জনবিন্যাস পালটে দেওয়া হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: টেক্সাস ও ওকলাহোমার পর বন্দুকবাজের জোড়া হামলায় কাঁপল আমেরিকা, মৃত ৪]
পাক দূতের অভিযোগের পরই বাংলাদেশ যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তোপ দাগে ভারত (India)। কীভাবে পূর্ব-পাকিস্তানে (বর্তমানে বংলাদেশ) সংখ্যালঘুদের গণহত্যা চালিয়েছিল খান সেনা, নিরাপত্তা পরিষদে সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন ভারতের স্থায়ী মিশনের আইনজীবী ড. কাজল ভাট। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবরই মিথ্যাচার করে এসেছে পাকিস্তান। কীভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গকারীদের দায়বদ্ধ করে বিচার ব্যবস্থা মজবুত করা যায়, তা নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করছি। কিন্তু নিয়তির পরিহাস, পাকিস্তানের প্রতিনিধি বোধহয় বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, কীভাবে গণহত্যার দায় এড়ানো যায় পাকিস্তানিই তার প্রমাণ। অধুনা পূর্ব-পাকিস্তানে গণহত্যার চালানোর লজ্জাজনক অতীত রয়েছে তাদের। ক্ষমা চাওয়া দূরের কথা, ওই গণহত্যার দায় স্বীকারও করেনি পাকিস্তান। কাশ্মীরে সংখ্যালঘুদের নিশানা করে জনবিন্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা করছে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা। আমি পাকিস্তানের (Pakistan) ভ্রম দূর করে আবারও জানতে চাই কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।”
উল্লেখ্য, এমাসের শুরুতেই জমা পড়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu & Kashmir) পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত খসড়া। ২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দেওয়া হয় দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ (Ladakh)। এরপরই নিশ্চিত হয়ে যায়, সংবিধানের নিয়ম মেনে এবার এখানকার লোকসভা ও বিধানসভার আসনেরও পুনর্বিন্যাস করতে হবে। অবশেষে প্রায় আড়াই বছর পরে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে জম্মু ও কাশ্মীর যখন রাজ্য ছিল, তখন সব মিলিয়ে এখানকার বিধানসভায় আসনসংখ্যা আগে ছিল ১১১টি। যার মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ছিল ২৪টি আসন। লাদাখে ছিল ৪টি। জম্মু ও কাশ্মীর মিলিয়ে ছিল ৮৩টি আসন। আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে তা দাঁড়িয়েছে ৯০টি।