সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার রামমন্দির নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে দরবার পাকিস্তানের। জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে সুবিধা করতে না পেরে ফের ধর্মের কার্ড খেলছে সন্ত্রাসবাদের চারণভূমি পড়শি দেশটি। যে দেশে অহরহ সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টানদের উপর নেমে আসে মৌলবাদের খাঁড়া এবার সেই দেশই ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ধ্বজাধারী হিসেবে নিজেকে জাহির করতে মরিয়া।
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে সরাসরি কড়া ভাষায় ভারতের নিন্দা করেছিল পাকিস্তান। এবার রাষ্ট্রসংঘেও রামমন্দির নিয়ে প্রশ্ন তুলল ইসলামাবাদ। এই মন্দির নির্মাণ আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তোপ দাগল পড়শি দেশটি। রাষ্ট্রসংঘের সভ্যতা বিষয়ক দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল মার্টিনসকে বুধবার একটি চিঠি লিখেছেন রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মুনির আকরম। ওই চিঠিতেই মুনির রামমন্দিরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে লিখেছেন, ‘পাকিস্তান রামমন্দির নির্মাণ ও প্রাণপ্রতিষ্ঠার কড়া নিন্দা জানায়। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধবংস করে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এই মন্দির ভারতে আঞ্চলিক সম্প্রীতি ও শান্তি বজার রাখার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”
[আরও পড়ুন: পদ্মভূষণে সম্মানিত ফক্সকনের সিইও, কেন এই সম্মান পেলেন তাইওয়ানের প্রবীণ নাগরিক?]
ভারতে আরও বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে এই অভিযোগ জানিয়ে পাকিস্তানের প্রতিনিধি আরও লেখেন, ‘বাবরির মতই আরও কয়েক মসজিদ যেমন বারাণসির জ্ঞানবাপী মসজিদ, মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদের জন্যও অপবিত্রতা ও ধবংস অপেক্ষা করছে। ভারতের ধর্মীয়স্থানগুলো রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করুক রাষ্ট্রসংঘ। ওই দেশের কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গা নিজেদের বলে দাবি করে নিয়েছে।’
বলে রাখা ভালো, এই প্রথমবার নয়। এর আগেও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এর আগে কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও রাষ্ট্রসংঘে একাধিকবার ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু প্রত্যেকবারই ইসলামাবাদের সব নিন্দার যোগ্য জবাব দিয়ে এসেছে দিল্লি। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল বিদেশমন্ত্রক।
উল্লেখ্য, ২২ জানুয়ারি,অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করে বিরাট মন্দিরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতজুড়েই যা নিয়ে ছিল বিরাট উন্মাদনা। এমনকী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রামজোয়ার দেখা গিয়েছিল। এই আবহে বাবরি ভেঙে রামমন্দির নির্মাণের ঘটনাকে সরাসরি নিন্দা করল পাকিস্তান। এক বিবৃতিতে পাক বিদেশমন্ত্রক মন্তব্য করেছিল, “দুঃখজনকভাবে ভারতের উচ্চতর বিচার বিভাগ শুধুমাত্র এই ঘৃণ্য কাজের জন্য দায়ী অপরাধীদের বেকসুর খালাসই করেনি, বরং ভেঙে ফেলা মসজিদের জায়গায় একটি মন্দির নির্মাণেরও অনুমতি দিয়েছে।” এবার রাষ্ট্রসংঘেও এই বিষয়টি নিয়ে সরব হল পাকিস্তান।