shono
Advertisement
Royal Bengal Tiger

পারেনি লালগড়, বাঘিনী জিনাতকে সুস্থ দেখে আফসোস মিটল বাঘঘরাবাসীর

২০১৮ সালে লালগড়ের বাঘঘরায় শিকার উৎসবের গণপ্রহারে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। তা নিয়ে আক্ষেপ ছিল এলাকাবাসীর।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:17 AM Dec 30, 2024Updated: 09:21 AM Dec 30, 2024

সম্যক খান, মেদিনীপুর: সেই আফসোসের চৈত্রমাস ফেরেনি এবার। তাই খুশি বাঘঘরা। ওড়িশার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস জিনাত যখন এ জঙ্গল থেকে ও জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল আর তাকে ধরতে বনদপ্তর যখন খাঁচা নিয়ে ছুটছিল ঝাড়গ্রাম থেকে পুরুলিয়া হয়ে বাঁকুড়ায়, তখন মেদিনীপুর সদর ব্লকের বাঘঘরার মানুষ একটাই প্রার্থনা করছিলেন। সেই ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল, চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিনটি যেন ফিরে না আসে আর! বাঘঘরার মানুষ আগেও স্বীকার করেছিলেন, ''সেদিন বাঘটার মৃত্যু না হলেই ভালো হত!'' গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, ''আসলে নিজেদের বাঁচাতেই পালটা হামলা করেছিলেন শিকারিরা।''

Advertisement

ফের জঙ্গলমহলে বাঘ ঢুকেছে শুনে বাঘঘরার বাসিন্দাদের কামনা ছিল, এই বাঘটাকে অন্তত বনকর্মীরা যে ভাবেই হোক ধরুক। ২০১৮ চৈত্রের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।” রবিবার জিনাত খাঁচাবন্দি হওয়ার পরে চাঁদড়ার বাঘঘরার বাবলু হাঁসদা, বাদল হাঁসদা, সুভাষ হাঁসদারা আক্ষেপ করেই বললেন, "বনদপ্তর যদি সেদিন এরকম পদক্ষেপ নিতে পারত তাহলে হয়তো অকালে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটিকে প্রাণ হারাতে হত না।"

বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহি জঙ্গল থেকে বনদপ্তরের হাতে ধরা পড়া জিনাত। নিজস্ব ছবি।

নিজেরা হেরেছেন, তবুও খুশি। তাঁদের বক্তব্য, পশ্চিম মেদিনীপুর পারেনি। কিন্তু সেই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছে পাশের জেলা বাঁকুড়া। পুরোপুরি রক্তপাতবিহীনভাবে বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করতে সমর্থ হয়েছে তারা। তাই সেদিনের আফসোস থাকলেও আজ খুশি বাদল, বাবলু, সুভাষরা। সাড়ে ৬ বছর আগে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া রেঞ্জের বাঘঘরা জঙ্গলে অভিশপ্ত ১৩ এপ্রিল ছিল শিকার উৎসবের দিন। বিভিন্ন এলাকার শিকারিরা হাজির হয়েছিলেন ওই জঙ্গলে। হাজির ছিলেন বাদল, বাবলু, সুভাষরাও।

সুভাষের কথায়, ''বাঘটি একেবারে কাছে এসে গিয়েছিল। আমি ছিলাম একটু দূরত্বে। সামনাসামনি পড়ে যায় ভাইপো বাদল এবং অপর এক গ্রামবাসী বাবলু। তাঁরা দুজন গুরুতর আহতও হন। দীর্ঘ প্রায় দশদিন তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। কিন্তু কীভাবে বাঘটির মৃত্যু ঘটল, তা আজও অজানা।'' সুভাষরাও কিছু মনে করতে পারছেন না। তাঁদের কথায়, প্রচুর ভিড় ছিল শিকার উৎসবে। কীভাবে কী ঘটেছে, বোঝা যায়নি। তবে বাঘটিকে যে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল তা কল্পনাতীত। প্রথমে ভারী বস্তু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। যার ফলে তার মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। তারপর বল্লমে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ও লাঠিপেটা করে মেরে ফেলা হয়েছিল।

২০১৮ সালে লালগড়ের বাঘঘরায় এই বাঘকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। ফাইল ছবি।

বাঘঘরাবাসীর তাই আফসোস, পরিকল্পনা করে খাঁচাবন্দি করে নিতে পারলে বাঘটিকে অকালে প্রাণ হারাতে হত না। তাঁরা বলছেন, ''সেই বাঘ খুনে গোটা দেশ আমাদের গ্রামের নাম জেনে গিয়েছিল। বাঘ মারার অপবাদ আজও আমাদের শুনতে হয়। এদিন পাশের জেলা বাঁকুড়ার মানুষ আমাদের সেই অপবাদ খানিক হলেও মুছে দিল।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ফেরেনি ২০১৮ সালে লালগড়ে বাঘ-হত্যার স্মৃতি, আফসোস মিটল বাঘঘরাবাসীর।
  • রয়্য়াল বেঙ্গল টাইগার জিনাত অক্ষত অবস্থায় ধরা পড়ায় খুশি তাঁরা।
Advertisement