shono
Advertisement

সুরক্ষিত করুন বাচ্চাদের আর্থিক ভবিষ্যত, জেনে নিন সহজ টিপস

ছোট থেকে বাচ্চাকে শেখান, একটু একটু করে টাকা জমাতে।
Posted: 04:44 PM Jul 10, 2023Updated: 04:51 PM Jul 10, 2023

শৈশবই হল সেই সুসময়, যখন নানা ধরনের সুঅভ‌্যাসের সঙ্গে পরিচয় করানো যায়। তাহলে সঞ্চয়-শিক্ষাই বা বাদ যায় কেন এই তালিকা থেকে? অভিভাবকদেরই এগিয়ে আসতে হবে এর জন‌্য। ছোট থেকে বাচ্চাকে শেখান, একটু একটু করে টাকা জমাতে। যাতে পরবর্তীকালে তা তাদের আর্থিক স্বাধীনতার পথ খুলে দিতে পারে। পরামর্শ দিলেন রমাকান্ত মহাওয়াড়

Advertisement

থাযথ ফিনান্সিয়াল প্ল‌্যানিং ছাড়া ছোটদের আর্থিক সুরক্ষা? অসম্ভব এবং অবাস্তব, দুই-ই। আর এমন যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বড়দের উপর বর্তায়। তাই বাবা-মা বা পরিবারের প্রবীণদের প্রথম থেকেই বাচ্চার জন‌্য পরিকল্পনা করতে হবে। একইসঙ্গে তৈরি করতে হবে, উৎসাহ দিতে হবে, ‘গুড মানি ম‌্যানেজমেন্ট হ‌্যাবিটস’। যথাসম্ভব আগে থেকে ভাল অভ‌্যাস গঠনের উপর জোর দেওয়া উচিত। ‘সঞ্চয়’-এর জন‌্য আমার প্রথম লেখায় বাবা-মা’দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার উদ্দেশ‌্য- কয়েকটি প্র্যাক্টিকাল টিপস দেওয়া, যাতে তাঁরা বাচ্চাদের আর্থিক ভবিষ‌্যত সুরক্ষিত রাখতে পারেন। সঙ্গের তালিকা দেখুন-
# অর্থের মর্ম কী? বাচ্চাকে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিন।
# বাচ্চার শর্ট এবং লং টার্ম গোলস চিহ্নিত করতে শেখান।
# বাজেটিংয়ের ধারণা করতে সাহায‌্য করুন।
# ব‌্যাংকিংয়ের প্রাথমিক পাঠ দিন বাচ্চাকে।
# সেভিং এবং ইনভেস্টিং কীভাবে করা যায়, তা শেখান।

বিশদে বলা যাক। বাচ্চারা প্রথমেই টাকা-পয়সার খুঁটিনাটি বুঝবে না, তাই ধীরে ধীরে অর্থের মর্ম তাদের আন্দাজ করার সুযোগ দিতে হবে। ছোটখাটো ‘টাস্ক’ যদি দেন, আর তা করার বিনিময় যদি সামান‌্য রোজগারের সুবিধাও একইসঙ্গে দেন, তাহলে তারা বুঝতে পারবে। শিখিয়ে দিন কীভাবে টাকা বাঁচিয়ে, ভাল কাজে তা খরচ করতে হয়। আগামিদিনে দায়িত্ব নেওয়ায় রাস্তায় তারা এইভাবেই এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

ফিনান্সিয়াল গোলস তো সবাইকার জন‌্য জরুরি, বাচ্চারাও ব‌্যতিক্রম নয়। নতুন খেলনা বা কলেজে কাজে লাগবে এমন ফান্ড, এই বার্তাই তাদের লক্ষ‌্যবস্তু হতে পারে। কোনও প্রয়োজনীয় বস্তু পাওয়ার ইচ্ছা তো এই ভাবেই জাগ্রত হয়, আর সঠিক পদ্ধতি মেনে তা পাওয়াও যায়। পাওয়ার জন‌্য চাই মোটিভেশন, ছোটরা যেন তা বুঝে যায় জীবনের প্রারম্ভে।

বাজেটিংয়ের ধারণা স্বচ্ছ হওয়া উচিত, না হলে পরে বয়স বাড়লে টাকা-পয়সা সামলানোর প্রক্রিয়া ঠিক আয়ত্ত্বের মধ্যে থাকবে না। সরলভাবে বাজেটের উপকারিতা বুঝিয়ে বলুন। সম্পদের জন‌্য চাই সাশ্রয়, ব‌্যয়, দান-এই সবই খুব জরুরি। বাচ্চাদের ব‌্যক্তিগত খরচ থাকতেই পারে, কোনও সুন্দর হবি হয়তো-তার জন‌্য তাদের চাই অনুশাসন। গুরুজনরাই তা শেখাতে পারেন।

একইভাবে সেভিংস অ‌্যাকাউন্টের বিষয়ে জানিয়ে দিন আপনার সন্তানকে। অ‌্যাকাউন্ট খুলে দিন, রেগুলার ডিপোজিট করার উপযোগিতা বোঝান। ইন্টারেস্ট রেট কী, কী তার ক্ষমতা, কীভাবে কম্পাউন্ডিং হতে পারে-সরলভাবে শিখিয়ে দিতে হবে। আর এই উপায়েই শিখিয়ে দিন স্টক এবং বন্ড, অথবা মিউচুয়াল ফান্ডের গোড়ার কথাগুলি। লগ্নির সঙ্গে রিস্ক জড়িত, এই প্রসঙ্গটি অবশ‌্যই বোঝাবেন। তবে লো-রিস্কও যে হয়, তাও জানা দরকার বাচ্চাদের।

[আরও পড়ুন: চিন-আমেরিকাকে টেক্কা! মর্গান স্ট্যানলিকেও ছাপিয়ে গেল HDFC ব্যাংক]

দেখুন আমি সবসময়ই বলি, ‘লিড বাই এগজাম্পল’। আপনার সন্তান তো আপনার কাছেই শিখবে, বাবা-মাই তো গুরু! তাই আর্থিক সু-অভ‌্যাস হাতেকলমে শেখান। দেখিয়ে দিন, আপনি নিজে কীভাবে সংসারের খরচ পরিকল্পিত উপায়ে করার চেষ্টা করেন। কীভাবে বিভিন্ন আর্থিক সিদ্ধান্ত নেন সব কিছু চিন্তা করে। আপনার শেখানো অনুশাসন ওরা মনে রাখবে, নিজেরা করতে আগ্রহী হবে। আমি নিজে এমনভাবেই আমার সন্তানদের শিখিয়েছি, তাই আমার উদাহরণই দিচ্ছি। বাল‌্যকাল থেকে টাকা বঁাচাতে চাওয়া ওদের পরবর্তী জীবনে ভীষণভাবে কাজে লেগেছে, এই কথা জোর গলায় বলতে পারি।

সেভিংয়ের অভ‌্যাস ঘিরে অল্প বয়সে যে উপলব্ধি, তা আরও পরিণত বয়সে ইনভেস্টিংয়ের অভ‌্যাসে বদলে যায়। অপেক্ষাকৃত আগে, জীবনের প্রথম পর্যায়ে যদি কেউ আর্থিকভাবে স্বাধীন হয়, তা তো পরিবারের জন‌্য আনন্দদায়ক।

সব শেষে বলি, তাড়াতাড়ি শুরু করার বিকল্প নেই। শিক্ষা দেবেন কে? সংসারের গুরুজনরা, তাই তো? যথেষ্ট আগে তা আরম্ভ করুন, দেখবেন খুব শক্তপোক্ত কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। সন্তানদের উৎসাহ দিন, গাইড করুন। জীবনের পরবর্তী ধাপে, ওরা যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গিয়েছে, তখন ওদের আর্থিক সু-অভ‌্যাসগুলি সার্বিকভাবে কাজে লাগবে।

(লেখক ইনভেস্টমেন্ট কনসালটেন্ট)

 

[আরও পড়ুন: বিমা সুরক্ষা, লগ্নিতে লক্ষ্মীলাভও, ‘ডাবল ইঞ্জিন’ ইউলিপ প্লান]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement