গৌতম ব্রহ্ম ও অভিরূপ দাস: দিন দুয়েক ধরে চোখ ছলছল। বাড়ির কুকুরটার ঠান্ডা লেগেছে। এখন কিন্তু সামান্য ঠান্ডা লাগা পাত্তা না দেওয়ার মতো বিষয় নেই। কারণ, নাদিয়ার পর ভিক্টর। এবার করোনা ভাইরাস (Corona Virus) মিলেছে পোষা কুকুরের শরীরেও।
জর্জিয়া স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তরফে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, মালিকের থেকেই ভাইরাস ছড়িয়েছে কুকুরটির শরীরে। সম্প্রতি এই পোষ্যের মালিকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে পজিটিভ। প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনার পরিণাম কী? একইভাবে কি আক্রান্ত পশু থেকে মানুষের শরীরেও করোনা ছড়াতে পারে? সেক্ষেত্রে আরও দ্রুত ছড়াবে এই অসুখ। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয় ‘রিভার্স জুনোসিস’ (Reverse Zoonosis)।
ভাইরোলজিস্ট ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, মানুষের স্বাস্থ্য শুধু মানুষের উপর নির্ভরশীল নয়। প্রাণিকুলের উপরও নির্ভরশীল। এদের উপরেও নজরদারি চালানো উচিত। এটা করতে পারলে রোগের পূর্বাভাস আগেভাগে দেওয়া সম্ভব। এর জন্য বড় পাইলট স্টাডি দরকার। বিশেষ করে মানুষের কাছাকাছি থাকা প্রাণীর উপর নজরদারি দরকার। তাই আপাতত মালিকরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁদের পোষ্যের কাছে যেতে বারণ করা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিড়াল, কাঠবেড়ালি, বাদুড়, শিয়াল, শূকর, ভাম সার্স-কোভ-২ বহন করতে পারে। এদের পোষক বলা হয়। নেদারল্যান্ডে মিঙ্ক চাষ করা হয়। ইঁদুরের মতোই দেখতে এই লোমশ প্রাণী। এদের পশম দিয়ে ফার কোট তৈরি করা হয়। কিছুদিন আগে দু’টি ফার্মে মিঙ্কের মধ্যে অসুস্থতা দেখা যায়। সোয়াব টেস্ট করে কোভিড ধরা পড়ে। বিড়ালের মাধ্যমেই এই রোগ মিঙ্কের মধ্যে ছডি়য়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। এ ঘটনায় দু’জন মিঙ্কপালক আক্রান্ত হন। তারপর কয়েক হাজার মিঙ্ককে মেরে ফেলা হয়। তবে এদেশে এই ধরনের সার্ভেলেন্স হয়নি। ভোপালে ‘নিশাদ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিম্যাল ডিজিসেস। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি এই নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ, আলোচনা করতে গিয়ে ঘেরাও ২ স্বাস্থ্য আধিকারিক]
ডা. জোয়ারদার জানিয়েছেন, “বায়ো সেফলটি ল্যাব নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বেলেঘাটা নাইসেডে থ্রি প্লাস ল্যাব, বেলগাছিয়া প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ল্যাবরেটরি বায়ো সেফলটি ৩ তে কাজ শুরু করা যেতে পারে। বার্ড ফ্লুর পর এখানে এই ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়।” শিয়াল, কুকুর, নেকড়ে থেকে র্যাবিস রোগ হয়। ভেড়া থেকেও কঙ্গো ক্রিমিয়ান হেমারেজিক ফিভারে বহু লোক আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে পোষ্য থেকে রোগ ছড়ালে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। জুনোটিক নয় এমন অনেক ভাইরাসঘটিত রোগও আছে, যেমন রানিখেত রোগ (মুরগি), ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস (গরু)।
[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরলেই এবার হবে শাস্তি, নির্দেশিকা জারি বাংলার স্বরাষ্ট্র সচিবের]
The post পোষা কুকুরের করোনা? সাবধান! দ্রুতই সংক্রমণ ছড়াতে পারে মালিকের শরীরেও appeared first on Sangbad Pratidin.