সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: গত ১০ দিনে ন’ বার বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের (Petrol-Diesel Hike) দাম। যার জেরে বৃহস্পতিবার কলকাতায় সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে ডিজেলের দাম। পেট্রলের দাম পেরিয়েছে ১১০ টাকা। রান্নার গ্যাসের দাম ৫০ টাকা বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে হাজারের কোঠায়। সবমিলিয়ে জ্বালানির জ্বালায় জর্জরিত জনতা। কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এহেন মানববিরোধী পদক্ষেপের বিরোধিতা করে দিল্লির বিজয় চকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে কংগ্রেস (Congress)। নেতৃত্বে রয়েছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটপর্ব মিটতেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি। সেই নাগপাশে শেষ দশদিনে ন’বার অল্প অল্প করে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বেড়েছে যথাক্রমে লিটারপিছু ৬.৬৮ টাকা ও ৬.৪৩ টাকা করে। যার জন্য লক্ষ্মীবারে কলকাতায় পেট্রল ও ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে লিটারপিছু ১১১.৩৫ ও ৯৬.২২ টাকায়। ২১ মে যা ছিল যথাক্রমে ১০৪.৬৭ ও ৮৯.৭৯ টাকা।
[আরও পড়ুন: অভিযোগ জানিয়ে লাভ হয়নি, হারানো লাগেজ উদ্ধারে Indigo’র ওয়েবসাইট হ্যাক যুবকের]
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবারই কলকাতার রাস্তায় নেমেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলারা। নেতৃত্বে ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। গোলপার্ক থেকে রাসবিহারী মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। তার আগের দিন পথে নেমে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছিলেন তৃণমূলের ছাত্র-যুবরা। এবার তৃণমূলের দেখানো পথে হাঁটল কংগ্রেস। দিল্লির বিজয় চকে বসে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। সামনের সারিতেই রয়েছেন রাহুল গান্ধী, অধীর চৌধুরীরা।
মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী বলেন, “গত ১০ দিনে ৯ বার বেড়েছে জ্বালানির দাম। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করুক সরকার। আজ দিনভর দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে কংগ্রেস।” অধীর চৌধুরীর কথায়, “আমরা আগেই বলেছিলাম, পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটলেই লাফিয়ে বাড়বে জ্বালানির দাম। সেটাই হল। কেন্দ্র সরকার মানুষের কষ্ট বুঝবে না। জ্বালানির মূল্য এখনই কমানোর দাবি জানাচ্ছি আমরা। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।”
[আরও পড়ুন: অভিযোগ জানিয়ে লাভ হয়নি, হারানো লাগেজ উদ্ধারে Indigo’র ওয়েবসাইট হ্যাক যুবকের]
এদিকে অদ্ভুত যুক্তির ঢাল নিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে নেমেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। জানিয়েছেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবেই দেশে জ্বালানির দাম বাড়ছে। দুই দেশ সংঘর্ষে জড়ালেও বিভিন্ন দেশে তার পরোক্ষ প্রভাব পড়ছে। যুদ্ধের জন্যই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু’সপ্তাহে ব্যাহত হয়েছে তেল সরবরাহও। তবে জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে একাধিক পদক্ষেপ করতে চলেছে সরকার।” একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ”কংগ্রেস আমলে দু’ লক্ষ কোটি টাকার অয়েল বন্ড জারি করা হয়েছিল। তাই সেই সময় অতিরিক্ত ভরতুকিতে মিলত পেট্রোল-ডিজেল। এখন তার বদলে জনগণের খরচের উপর ভরতুকি দেওয়া হয়। যা ২০২৬ পর্যন্ত চলবে।” অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন আগামী চার বছর পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না কেন্দ্রের।