সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আতাতুর্কের দেশে ফের মসনদে বসেছেন রিসেপ তাইপ এরদোগান। আর কূটনৈতিক সৌজন্য মেনেই তুরস্কের পুনর্নিবাচিত প্রেসিডেন্ট তথা পাকিস্তানের ‘বিশেষ বন্ধু’ এরদোগানকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সোমবার এরদোগানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নিবাচিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন। আমার দৃঢ বিশ্বাস আগামী দিনে আমাদর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে সহযোগিতা আরও মজবুত হবে।’
লক্ষণীয়, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ হওয়ার পর তুমুল শোরগোল শুরু করে পাকিস্তান। তবে এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফোরামে কমবেশি সব দেশই ভারতের পাশে ছিল। যে মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশ পাকিস্তানের অপপ্রচারে কান দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিল তুরস্কও। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরদোগান কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৩৭০ ধারা বাতিলকে ভারতের কাণ্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন। তারপর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে। যার জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রস্তাবিত আঙ্কারা সফর বাতিল করে দেয় ভারত।
এদিকে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ভূমিকম্পের পরই ৭ ফেব্রুয়ারি মোদির নির্দেশে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দল তুরস্কে যায়। মোট ৩টি এনডিআরএফের দল গিয়েছিল। পাঠানো হয়েছিল বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের দলকেও। বহু সামগ্রী, সাহায্যের ত্রাণ, মেডিক্যাল বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে বায়ুসেনার বিমানে সেনার বিশেষ একাধিক টিম রওনা হয় তুরস্কের উদ্দেশে। প্রায় দু’সপ্তাহ উদ্ধারকাজ চালানোর পর দেশে ফিরে আসে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন দোস্ত’।
[আরও পড়ুন: পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সময়েই বিষপ্রয়োগ? হাসপাতালে সংকটজনক বেলারুশের প্রেসিডেন্ট]
এতকিছুর পরও গত মার্চ মাসে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসি-তে জম্মু-কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কথা তোলে তুরস্ক। ইসলাম ধর্মাবলম্বী দেশগুলির যৌথ মঞ্চ ওআইসি। এই মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আলোচনা বরাবর নাপসন্দ ভারতের। তাই তুরস্কের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নয়াদিল্লি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এরদোগানের পুনর্নিবাচন তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি এবং দলগুলির জন্য বড়সড় ধাক্কা। ২০২০ সালে ইস্তানবুলের ষষ্ঠ শতাব্দীর বিখ্যাত স্থাপত্য হেগিয়া সোফিয়া (Hagia Sophia) মিউজিয়ামকে মসজিদে পরিবর্তিত করছে তুরস্ক সরকার। এরদোগান প্রশাসনের এহেন পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। সেই পদক্ষেপে দুঃখপ্রকাশ করেন পোপ ফ্রান্সিস। ১৯৩৪ সালে বিপ্লবের পর আধুনিক তুরস্কের রূপকার সেক্যুলার নেতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের জমানায় এই হেগিয়া সোফিয়াকে মিউজিয়াম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।