সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় শুরু হল ১১তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকার (ব্রিকস) রাষ্ট্রপ্রধানরা। ২০১০ সালে ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভার জমানায় প্রথম সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ব্রাজিল। ব্রিকসের একাদশতম তথা ব্রাজিলে দ্বিতীয় ব্রিকস সম্মেলনে এবার বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বাগত জানালেন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। দু’দিনের এই সম্মেলনে যোগ দিতে বুধবার সকালেই ব্রাজিল পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সঙ্গে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ভারতীয় প্রতিনিধি দল।
এদিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সারেন মোাদি। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর সঙ্গেও। সন্ত্রাস দমন, আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়ানো, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, এই তিনটি ইস্যুর উপরেই জোর দেওয়া হয় বেশি।
এদিন বৈঠকের পর পুতিন মোদিকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান। পুতিনের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন মোদি। পুতিনের আবদার ছিল, ৯ ই মে হল রাশিয়ার বিজয় দিবস বা জাতীয় দিবস। ওই দিন নাৎসি বাহিনী সোাভিয়েত সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। দিনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রাশিয়ার কাছে অপরিসীম। রাশিয়ার এই ‘সাধারণতন্ত্র দিবস’ উদযাপনের দিনে মোদিকে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানান পুতিন। মোদি আগামী সাধারণতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোকে। তিনিও আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসারও। প্রযুক্তিগত লেনদেন, সাইবার নিরাপত্তা, স্মার্টফোনে ফাইভ-জি প্রযুক্তির ব্যবহার, আর্থিক বিনিয়োগ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ, বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলি নিয়ে ব্রিকসে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সফরের আগে থেকেই বিদেশমন্ত্রকের সচিব (অর্থনৈতিক সম্পর্ক) টিএস তিরুমূর্তি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানত দুটি লক্ষ্য নিয়ে মোদি যাচ্ছেন। এক, সন্ত্রাসবাদ দমনে, আর্থিক অপরাধ দমনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কঠোর আইন প্রণয়নে ঐকমত্য গড়ে তোলা। দুই, আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ আর্থিক ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি। ব্রিকসের সম্মেলনে এই দুটি বিষয় নিয়েই বক্তব্য রাখবেন মোদি। ব্রাজিলে পৌঁছে মোদির টুইট, সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক অপরাধ দমনে ঐকমত্য গড়ে তোলা নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাস করাতে চায় ভারত। সেই সঙ্গে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির আর্থিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যতের দিকেই তাঁর নজর থাকবে।
জানা গিয়েছে, ব্রিকসের বিজনেস ফোরামের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মোদি যোগ দেবেন। ফুটবলের মক্কা হল ব্রাজিল। ফুটবলে ভারতকে প্রযুক্তিগত ও উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্রাজিল যাতে ভারতীয় ফুটবল সংস্থা এআইএফএফকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে সে ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ভারতীয় আমলারা। এছাড়া ভারতের সঙ্গে বাকি দেশগুলির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে ব্রিকসের মঞ্চে। তবে ব্রিকসের সামরিক গণঅভ্যুত্থান, অশান্তির ঘটনা ব্রাজিলে বড় ছায়া ফেলেছে। বলিভিয়ার পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো-সহ পুতিন, জিনপিং, মোদিও। বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসকে প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হয়েছে কলম্বিয়ায়। বলিভিয়ায় যাতে কেউ সামরিক হস্তক্ষেপ না করে বা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা না করে সেজন্য আমেরিকা, ব্রাজিলকে সতর্ক করে দিয়েছেন পুতিন।
[আরও পড়ুন: কুলভূষণকে অসামরিক আদালতে আবেদনের সুযোগ, আইন বদলাচ্ছে পাকিস্তান]
The post ব্রিকস সম্মেলনে বৈঠক দুই রাষ্ট্রপ্রধানের, বিজয় দিবসে মোদিকে আমন্ত্রণ পুতিনের appeared first on Sangbad Pratidin.