সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুদিনের রাশিয়া সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মস্কো পৌঁছতেই রাজকীয় অভ্যর্থনা পেলেন তিনি। তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রথম উপ প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মনতুরভ। পদমর্যাদার নিরিখে যিনি ভ্লাদিমির পুতিনের পরেই। মোদিকে শুধু স্বাগত জানানোই নয়, হোটেল পর্যন্ত পৌঁছেও দেন তিনি। দুজনে একই গাড়িতে ছিলেন। বিমানবন্দরে গার্ড অফ অনারও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
রাশিয়ার মাটিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এহেন 'রাজকীয় অভ্যর্থনা' পরোক্ষে কি চিনকেই বার্তা দেওয়া? উঠছে এমনই প্রশ্ন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেই মোদির মস্কো সফর নিঃসন্দেহে কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেও লিখেছেন, "আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে মস্কো এসে পৌঁছলাম। দুদেশের মধ্যে গভীর সম্পর্কে দেশবাসী উপকৃত হবে।"
[আরও পড়ুন: ভূস্বর্গ ভয়ংকর! কাশ্মীরে সেনার কনভয়ে জেহাদি হামলা, শহিদ ৪ জওয়ান]
এই সফরের দিকে তাকিয়ে পশ্চিমী দুনিয়া। নজর রাখছে আমেরিকা ও চিনও। সম্প্রতি রাশিয়া সফরে এসেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেই সময় বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান রাশিয়ার দ্বিতীয় উপ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি চেরনিশেঙ্কো। পদমর্যাদার নিরিখে যিনি আবার মনতুরভের নিচে। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
নয়াদিল্লি-মস্কোর কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘ কয়েক দশকের। এনডিএ আমলে নয়াদিল্লির আমেরিকা-ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। কিন্তু যুদ্ধের আবহে সেই সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। আমেরিকা-ইউরোপের 'রক্তচক্ষু' উপেক্ষা করে মস্কো থেকে জ্বালানি কিনেছে ভারত। আমদানি হয়েছে সমরাস্ত্রও। তবে শুধু ভারত নয়, চিন-রাশিয়াও আরও কাছাকাছি এসেছে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, চিনের তরফে সম্পর্কে কিছুটা শৈথিল্য এসেছে। পশ্চিমী দুনিয়ার মন পেতে রাশিয়ার সঙ্গে 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছিল তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে মোদির রাশিয়া সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। পদমর্যাদার নিরিখে পুতিন পরবর্তী রাষ্ট্রনেতা মোদিকে স্বাগত জানিয়েছেন। যা দেখে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেজিংকে এটা স্পষ্ট করে দিল মস্কো যে ভারতও তাদের বন্ধু। তাই চিন যেন মস্কোর বন্ধুত্বের 'অসৎ' সুযোগ না নেয়।