অর্ণব আইচ: কলকাতায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি (Bangladesh) নাগরিক। আনন্দপুর থানা এলাকা থেকেই আরও ১৭ জনকে আটক করে জেরার পর বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এল পুলিশের। এর নেপথ্যে বড়সড় মানব পাচার (Human Trafficking) চক্র সক্রিয় বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অবৈধ পথে ভারতে ঢুকিয়ে বিশ্বের একাধিক দেশে পাচার করা হত বাংলাদেশি নাগরিকদের। কীভাবে নথিপত্র ছাড়া এত বাংলাদেশি ভারতে চোরাপথে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে নেমেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ। এ পর্যন্ত মোট ৩৭ জন বাংলাদেশিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।
নেপাল, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপের (Europe) একাধিক দেশ – গ্রিস, নেদারল্যান্ডসে পাচার করার জন্য এসব মানুষজনকে কলকাতায় এনে লুকিয়ে রাখা হত। তারপর সুযোগমতো সীমান্ত দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। সপ্তাহান্তে আনন্দপুর (Anandapur) এলাকার গুলশন কলোনিতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে, এখানেই বহু বাংলাদেশি ঢুকে পড়েছে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া। এরপর লখনউ এটিএসের (ATS) সহায়তায় শনিবার রাতে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার আরও ১৭ জন ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। এই অপারেশনে যুক্ত হয় কলকাতা পুলিশের এসটিএফও। এদেরই জেরা করে পুলিশের হাতে মানব পাচারের তথ্য আসে।
[আরও পড়ুন: সল্টলেকে তরুণীর শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত ASI-সহ ২ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করল কর্তৃপক্ষ]
রবিবার আটক হওয়া ১৭ জনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মূল অভিযুক্ত মাহফিজুর রহমান। সে দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এদের দেশের বাইরে পাচার করার জন্য কলকাতায় নিয়ে এসেছিল। এরপর তাদের অবৈধভাবে পাসপোর্ট, ভিসা, আধার কার্ডের মতো প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিত মাহফিজুর। এদের সকলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭০, ৪১৯, ৪২০ ধারা-সহ মোট সাতটি ধারায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি ফরেনার্স অ্যাক্টে (Foreigners Act) রুজু হয়েছে মামলা।
[আরও পড়ুন: ফের চিকিৎসককে ‘চড়’ রোগীর পরিবারের, প্রতিবাদে জরুরি বিভাগে কর্মবিরতি মেডিক্যাল কলেজে]
পুরভোটের প্রাক্কালে শহরে এভাবে চোরাপথে বাংলাদেশিদের প্রবেশের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ল। সীমান্ত সুরক্ষার মধ্যেও কীভাবে এই অনুপ্রবেশ ঘটছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আনন্দপুর এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে খবর।