সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজ নিয়ে ব্যস্ত পুলিশ-প্রেমিক। বিয়ে করার সময়টুকুও নেই। বিয়ের দিন ঠিক করেও পরে তা কাজের চাপের জন্য বাতিল করতে হয়েছে। মুখে রা কাটেনি প্রেমিকা। তবে মনে মনে নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও কষ্ট পেয়েছে। বুঝি ভেবেছে, তার ভালবাসার কি কোনও মূল্যই নেই। বালাই ষাট! তা কেন? সত্যিকারের ভালবাসলে যে সম্পর্কের পরতে পরতে শুধুই চমক অপেক্ষা করে। রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে বাকদত্তা হুয়াং মেংজিয়াওকে বিয়ে করে আরও একবার তা প্রমাণ করে দিলেন চিনের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর অফিসার ঝ্যাং কিনগুয়া। নিজের কাজের প্রতি কোনওরকম অবহেলা না করেও পার্সোনাল লাইফ আর প্রফেশনাল লাইফকে যে ব্যালেন্স করে চলা যায় তা দেখিয়ে দিলেন এই পুলিশকর্তা।
গত ২৩ জানুয়ারি বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন জ্যাং আর হুয়াং। এদিকে আগামী ২৮ জানুয়ারি চিনা নববর্ষ। আচমকাই ডিউটির চাপ বেড়ে যায় ঝ্যাংয়ের। প্রেমিকার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করে ২৩ তারিখ বিয়েটা করবে না। মাথা নেড়ে প্রেমিকের সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিলেন হুয়াং।কিন্তু মন যে অন্য কথা বলছিল প্রেমিকার চোখের ভাষায় তা পড়ে ফেলে ঝ্যাং। সেদিন সারারাত তিনি ঠিক করে ঘুমোতে পারেননি। পরদিন বিষয়টি সহকর্মীদের জানালে তাঁরাই পরামর্শটা দেন। এরপর সবটাই গল্পের মতো।
২২ তারিখ হুয়াংঝৌ রেলস্টেশনে দেখা করেন ঝ্যাং আর হুয়াং। একটা লাল জ্যাকেট, ক্যাজুয়াল ট্রাউজার আর মাথায় পনিটেল। প্ল্যাটফর্মে হাজির হুয়াং। নজরে আসে পুলিশের পোশাক পড়ে প্ল্যাটফর্মে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ঝ্যাংয়ের সহকর্মীরা। হাতে ফুলের তোড়া আর এক গাল হাসি নিয়ে এগিয়ে আসছেন ঝ্যাং। প্রথমটা হকচকিয়েই গিয়েছিলেন ওই যুবতী। প্রিয়তমার পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসলেন ঝ্যাং। এগিয়ে দিলেন ফুলের তোড়াখানা। দু’চোখে তখন সবকিছু ঝাপসা হুয়াংয়ের। গাল ছুঁয়ে জল গড়িয়ে এসেছে ঠোঁটের আশেপাশে। এখনই যে ঝ্যাং তাঁকে বিয়ে করতে চাইছেন। চশমা সরিয়ে চোখ মুছে সলজ্জ হাসি হুয়াংয়ের।
কথা রেখেছে প্রেমিক। ভালবাসার মূল্য দিয়েছে। আর কী চাই। হুয়াংঝৌয়ের প্ল্যাটফর্মে জানুয়ারিতেই নেমে এল অকাল বসন্ত। এভাবেই হাজার বছর পার করুক ঝ্যাং-হুয়াংরা। চিন থেকে চিনারপার্ক। যুগ যুগ ধরে এমনই ওম ছড়াক প্রেমিকহৃদয়ের উষ্ণতা।
The post পুলিশ প্রেমিকের সময় কই! প্ল্যাটফর্মেই সারলেন বিয়ে appeared first on Sangbad Pratidin.