অরূপ বসাক, মালবাজার: পরিযায়ী পাখিদের কথা মাথায় রেখে জানুয়ারির শুরুতেই গজলডোবা, তিস্তা ব্যারেজে এলাকা এবং জঙ্গল এলাকায় পিকনিক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তার জেরে পিকনিকের ভিড়ি ডুয়ার্সের নদী এলাকায়। যার জেরে ডুয়ার্স সংলগ্ন মালবাজারের ঘীস এবং লীস নদী এলাকায় ছড়াচ্ছে দূষণ।
রবিবার দিন লীস নদী এলাকায় গিয়ে দেখা গেল অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি। গত দিনে যাঁরা এই লীস নদী এলাকায় পিকনিক করে গেছেন, তারা লীস নদীর জলে ফেলে গিয়েছেন প্লাস্টিকের গ্লাস, থার্মোকলের পাতা, মদের বোতল-সহ নোংরা আবর্জনা। যা প্রতিনিয়ত দূষিত করছে লীস নদীর জল। নদীর ধারে যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে পিকনিক করতে আসা পার্টির ফেলে যাওয়া আবর্জনা।
[আরও পড়ুন: ১ এপ্রিল থেকেই ভারতে ‘পরিবেশ বান্ধব’ জ্বালানি, বাড়বে পেট্রল-ডিজেলের দাম]
দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই পিকনিক করতে এসেছেন। দেখা গেল, সেইসব পিকনিক পার্টি নদীর মাঝে বসিয়েছে মদের আসর। যেখানে সেখানে ফেলে দিচ্ছে খালি মদের বোতল, গ্লাস। যা পিকনিকে আসা অন্যান্যদের অসুবিধায় ফেলছে। উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে চলছে আসর। যা এলাকার শান্ত পরিবেশ অশান্ত করে রেখেছে। দেখার কেউ নেই। এদিন বহু পরিবার এই লীস নদী এলাকায় পিকনিক করতে এসেছিল, কিন্তু যে ভাবে মদের আসর বসিয়ে পিকনিক চলেছে, তাতে সমস্যায় পড়েছেন বহু পরিবার।
এসব দেখে চূড়ান্ত বিরক্ত পরিবেশপ্রেমীরা। এদিন ওদলাবাড়ির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিমালয়ান ইকোলজি কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের সদস্য পুরো লীস নদী এলাকায় সাফাই অভিযান করেন। নদী থেকে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র, থার্মোকলের পাতা তুলে আগুন ধরিয়ে দেন। যেখানে সেখানে পরে থাকা খালি মদের বোতল বস্তায় ভরে অন্যত্র নিয়ে যান। এলাকায় পিকনিকে আসা মানুষদের বোঝান, নদীতে আবর্জনা ফেলবেন না। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। বন্যপ্রাণীদের অসুবিধা হবে। সংস্থার সদস্য শেখর দে, রানা দে সরকার, মৃণাল সিংহ রায়দের কথায়, ”এই সব এলাকায় বন দপ্তরের পাহারায় থাকা প্রয়োজন। কিন্তু কোনও বনকর্মীর দেখা পেলাম না। সবাই আনন্দ করে পিকনিক করুক, এটাই চাই। কিন্তু পিকনিক এর নাম করে নদী এলাকা নোংরা করা এটা ঠিক নয়। তাই এদিন আমরা নদী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করলাম।”
[আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ, সরস্বতী পুজোর প্রসাদের সঙ্গে দেওয়া হল চারাগাছ]
সপরিবারে পিকনিকে আসা রাজু পাল, নান্টা ঘোষ, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ”আমরা এখানে এসে দেখি নদীর মধ্যে নোংড়া আবর্জনায় ভরে গেছে। যেখানে সেখানে বসেছে মদের আসর। এই ভাবে পিকনিক না করাই ভাল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে টহলদারির দরকার ছিল। যাতে কোনও রকম অপ্রিতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়। আমরা চাই, শান্তিমতো পিকনিক করুক সবাই। পরিবেশকে বাঁচিয়ে আনন্দ করতে হবে।” মালবাজার বন দপ্তরের রেঞ্জার বিভূতিভূষন দাসের কথায়, ”ওই এলাকা কালিম্পং বন দপ্তরের অধিনে। তবে প্রতি রবিবার দিন আমরা ওই এলাকায় টহল দিই। যাতে কোনও পিকনিক পার্টি এলাকায় দূষণ করতে না পারে।”
The post উত্তরবঙ্গে বদল বনভোজনের স্থল, নদী লাগোয়া এলাকায় ছড়াচ্ছে ব্যাপক দূষণ appeared first on Sangbad Pratidin.