সুকুমার সরকার, ঢাকা: শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও প্রতি কেজি আলু বিক্রি হল ৪০০ টাকা দরে। হেমন্তের শুরুতে বাজারে ওঠা নতুন আলু (Potatoes) এই দামেই বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। সেখানে প্রতি বছর হেমন্তের শুরুতে নতুন আনাজ-শাক-সবজি নিয়ে নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠেন। বছরের নতুন সবজিতে এমনিতেই দাম বেশি থাকে। তার উপর যোগ হয়েছে নবান্ন উৎসব। তাই শুক্রবার আলুর দাম এত চড়া বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। আকাশচুম্বী দাম হলেও নতুন আলু কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল বেশি।
এদিন সকালে বাংলাদেশের (Bangladesh) দিনাজপুর রেলওয়ে বাজারে নতুন জাতের ১৫ কেজি আলু নিয়ে আসেন সূর্য কুমার ও টিয়া নামে দু’জন বিক্রেতা। সূর্য কুমার ১০ কেজি ও টিয়া পাঁচ কেজি আলু এনেছিলেন। বাজারে আসার পর ঘণ্টা তিনেক লাগে সেগুলো বিক্রি করতে। ১০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত কিনেছেন ক্রেতারা। চড়া দামে আলু বিক্রির খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, চড়া দাম হলেও আলু বিক্রেতার আশপাশে রয়েছেন কয়েকজন ক্রেতা। কেউ নিচ্ছেন ১০০ বা ২৫০ গ্রাম। আবার কয়েকজন আধ কেজি আলুও কিনেছেন।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস নয়! বিজেপিকে হারাতে পারে তৃণমূলই, মেঘালয়ে দাঁড়িয়ে ফের দাবি অভিষেকের]
ক্রেতারা জানান, এদিন শুক্রবার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসব উদযাপন করবেন। এই উৎসবে খাবারের সবকিছুই তৈরি হয় বছরের নতুন উপকরণ দিয়ে। ভাত রান্না হয় নতুন ধানের চালে। তরকারি রান্না হয় নতুন শাক-সবজি দিয়ে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজারে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উঠলেও নতুন আলু ওঠা শুরু হয়নি। তাই আগেভাগে তোলা নতুন আলু বাজারে তুলে দাম চড়া রেখেছেন বিক্রেতারা। নতুন আলু তরকারিতে দেওয়ার আশায় ক্রেতারাও বেশি দামে কেনেন। প্রকাশ সরকার নামে এক ক্রেতা বলেন, ”নবান্নে সবকিছুই নতুন লাগে। চাল, শাক-সবজি – সবকিছুই নতুন হতে হবে। নতুন সবজি হিসেবে আলু বাজারে উঠেছে। তাই বিক্রেতারা ৪০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করছেন। যেহেতু বাজারে আলু নেই, এই দামে বাধ্য হয়ে কিনতে হয়েছে। দামটা একটু বেশিই। দুই কেজি আলুর দামে এক কেজি খাসির মাংস পাওয়া যাবে।”
[আরও পড়ুন: আর হবে না ২৬/১১! জলপথে ‘কাসভ’দের আটকাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে তৈরি ‘খঞ্জর’]
আরেক ক্রেতা মানিক বসাক বলেন, ”নতুন আলু নবান্ন উৎসবে লাগবে। তাই এ দামে কিনতে বাধ্য হয়েছেন। দাম বেশি হওয়ায় ৫০০ গ্রাম নিয়েছেন। তবে তাঁর কাছে দাম কিছুটা কম নিয়েছে। তিনি ৩০০ টাকা দরে কিনেছেন শেষ সময়ে। আলু বিক্রেতা টিয়ার বক্তব্য, তিনি সকালে আলু কেনেন কৃষকের কাছ থেকে। নবান্নের সময় আলুর দাম বেশি থাকে। কেনাও বেশি দামে। আরেক বিক্রেতা সূর্য কুমার বলেন, ”সকালে তিনি বাহাদুরবাজার থেকে পাইকারি ১০ কেজি আলু কেনেন ২৪০ টাকা কেজি হিসেবে। বিক্রি করেছেন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।”