ধীমান রায়, কাটোয়া: যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন অন্তঃসত্ত্বা (Pregnant Woman)। তড়িঘড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হলে শারীরিক জটিলতার অজুহাতে তাঁকে জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেন চিকিৎসক ও নার্স। অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ার আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিশ্রামাগারেই সন্তান প্রসব করেন ওই অন্তঃসত্ত্বা। সোমবার সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা হাসপাতালে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিজন প্রতিবেশীরা। এই বিক্ষোভে শামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও সদ্যোজাতর জন্মের পরেই নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে ওই বধূ ও নবজাতককে হাসপাতালে ভরতি করে নেওয়া হয়। তারা বর্তমানে সুস্থই রয়েছেন।
কয়েকদিন আগেই পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে এমনই এক ঘটনা ঘটে। অন্তঃসত্ত্বাকে ভরতি না নিয়ে বর্ধমানে রেফার করে দিলে গাছতলাতেই শিশুর জন্ম দেন বধূ। ফের একই ধরনের ঘটনায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
[আরও পড়ুন : ‘এক পায়ে বাংলা জয় করব, দু’পায়ে দিল্লি’, চ্যালেঞ্জ মমতার]
সান্ত্বনার কথায়, “অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে সবে হাসপাতালে ঢুকেছি তখনই একজন নার্স আমাদের মেজাজ দেখাতে শুরু করেন। আমি রোগীর কাগজপত্র দেখাই। তবুও বাইরে বেরিয়ে যেতে বলে। খুব দুর্ব্যবহার করছিল। তখন ডাক্তারবাবুকে ডাকতে যাই। তারপর চিকিৎসকও একপ্রকার রোগীকে না দেখেই বর্ধমান রেফার করে দেন।” শাশুড়ি সন্ধ্যা হাওলাদারের অভিযোগ, “নার্স ও ডাক্তারবাবুরা চাইছিলেন কতক্ষণে আমাদের বের করে বর্ধমান পাঠানো যায়। ওদের মেজাজ দেখে হাসপাতালের বিশ্রামাগারে বৌমাকে এনে বসাই। তারপর পাড়ার ছেলেরা আ্যম্বুলেন্স ডাকতে যায়। তখন বউমার শারীরিক অবস্থা দেখে বিশ্রামাগারেই দাইমা প্রসব করিয়ে দেন। এই অবস্থায় আমার বউমার যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারত। হাসপাতাল থেকে একটুকুও সহযোগিতা তো পাইনি। উলটে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন : মনোনয়ন দাখিলের কর্মসূচিতে শামিল হতে গিয়ে উলটে গেল ভ্যান, আহত ২৫ তৃণমূল কর্মী]
এই ঘটনা জানাজানি হতেই গুসকরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। এরপরেই তড়িঘড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই বধূ ও তার সন্তানকে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভরতি করে নেন। একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন পিঙ্কিদেবী। এদিন কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবতনু দত্তকে হাসপাতালে দেখা যায়নি। হাসপাতালের কর্মীরা জানান, তিনি রবিবার রাতে রাত্রীকালীন ডিউটি করার পর সকালে বাড়ি চলে গিয়েছেন। নার্স শিখা মিত্র অবশ্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগ মানতে রাজি হননি। আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজু সানা বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। এই ধরনের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। গুসকরা হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নার্সকে শোকজ করতে। আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।”
দেখুন ভিডিও