সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আয়তনে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অথচ জনসংখ্যা খুব কম – এমনই এক দেশ কানাডা (Canada)। অজস্র নদী, নালা, হ্রদ, শীতকালে বরফঢাকা আর গ্রীষ্মে সবুজ গাছপালা, ফুলে, ফলে শোভিত প্রায় চারদিক দিয়ে সমুদ্রে ঘেরা হ্যালিফ্যাক্স শহর। পৃথিবীর সব দেশের লোকজন সম্প্রতি এখানে বসবাসের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। হ্যালিফ্যাক্সে ইদানিং প্রচুর বাংলাদেশি ও হিন্দু (Hindu) বাঙালির সংখ্যা বাড়ছে। আর যেখানেই বাঙালি, সেখানেই অন্তত ছোট করে হলেও শারদোৎসবের আয়োজন হবে না, তা তো হয় না। ফলে হ্যালিফ্যাক্সেও এবার দুর্গাপুজো (Durga Puja) হচ্ছে। আর এখানকার বাঙালি সোসাইটির উদ্দেশ্য, হিন্দু ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের পরিচিতি ও মেলবন্ধন ঘটানো। দুর্গাপুজোয় যে সেই কাজ ভালোভাবে হয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
নতুনভাবে নতুন সাজে দুর্গোৎসবে মেতে উঠেছে ইস্ট কোস্ট বাঙালি সোসাইটি। এবছর তাদের দ্বিতীয় শারদোৎসব। কলকাতা থেকে নিয়ে যাওয়া ফাইবার গ্লাসের দুর্গায় হচ্ছে পুজো। সপ্তাহান্ত অর্থাৎ ২০, ২১ ও ২২ অক্টোবর – এই তিনদিন দুর্গাপুজো চলছে কানাডার হ্যালিফ্যাক্সে। ২০ তারিখ, পুজোর সূচনায় এখানে আয়োজিত হয়েছিল ‘আনন্দমেলা’। সেখানে ইস্ট কোস্ট বাঙালি সোসাইটির সদস্যরা সকলে নিজেদের হাতের রান্নার স্বাদ ছড়িয়ে দিয়েছেন বাকিদের মধ্যে। নিজেদের রন্ধন প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। এর পর ২১ তারিখ ষষ্ঠী ও সপ্তমী পুজো হয়েছে একসঙ্গে।
২২ তারিখ অর্থাৎ রবিবার একদিনেই হচ্ছে অষ্টমী, নবমী ও দশমী পুজো। পুজো আজই শেষ। বিসর্জনের সুর বেজে গিয়েছে হ্যালিফ্যাক্সে।
নারী শিক্ষা, স্বাবলম্বন ও তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া পরিবার, সমাজ ও দেশের উন্নতি অসম্ভব। শব্দই ব্রহ্ম আর যাদের এই ব্রহ্ম জ্ঞান লাভ হয়, তাঁরা ব্রাহ্মণ। কিন্তু ব্রাহ্মণ শুধু জন্ম সূত্রে হওয়া নয়। হ্যালিফ্যাক্সের পুজো সেই বার্তাও দেয়। সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়, এখানে ধর্মান্ধতা, গোঁড়ামি ভুলে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে অব্রাহ্মণ মহিলারাও পৌরহিত্য করেন। যা গোটা দেশের কাছেই গর্বের বিষয়।
এছাড়া পুজোর প্রতিটি কর্মসূচিতেই মহিলাদের অংশগ্রহণ খুব স্বতঃস্ফূর্ত। পুজোর জন্য হলঘর বুক করা, রান্নাবান্নার আয়োজন, ঠাকুর সাজানো, পোস্টার তৈরি – এসব কাজেই তাঁরা এগিয়ে। সবমিলিয়ে হ্যালিফ্যাক্সের শারদোৎসব এবারও বেশ জমজমাট।