সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মারণ কোভিডের থাবাতেও পুজোয় পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি বাংলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র অযোধ্যা পাহাড় (Ajodhya Hill)। সংক্রমণ এড়াতে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির এই পাহাড়ের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হোটেল, লজ, কটেজ, রিসর্টের মালিক, কর্মচারী, গাইড-সহ পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত সকলের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে রবিবার থেকে জেলাশাসক, মহকুমা শাসক ও বিডিওর উপস্থিতিতে এই কাজ শুরু হয়েছে। লক্ষ্য একটাই যাতে সংক্রমণের ভীতি এড়িয়ে পুজোয় অন্যান্য সময়ের মতো এই পাহাড়ে পা রাখতে পারেন পর্যটকরা। যাতে উৎসবের দিনগুলিতে এই সুন্দরী অযোধ্যা পাহাড়ে একেবারে চিন্তামুক্ত হয়ে নির্বিঘ্নে বেড়াতে পারেন তাঁরা। সেইসঙ্গে ফি বছরের মতো এবারও পুজোয় যাতে এই পাহাড়ে পর্যটন ব্যবসা হয়।
অযোধ্যা হিলটপে একটি শিবির করে মোট ১১৩ জনের এই অ্যান্টিজেন (Antigen) পরীক্ষা হয়। যার মধ্যে ১১৩ জনই নেগেটিভ। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বাঘমুণ্ডি ব্লকের সমস্ত পুজো কমিটিকে নিয়েও করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত বৈঠক করে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “এই পাহাড়ে অন্যতম আয়ের উৎস পর্যটন। মূলত পর্যটন ব্যবসার উপরেই গ্রামীণ অর্থনীতি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে এই কাজটাকে সম্পূর্ণভাবে সচল রাখতেই হবে। পুজোয় পর্যটন ব্যবসা যাতে কোনভাবে মার না খায় তাই আমরা এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলের শিবির করে অ্যান্টিজেন টেস্ট করাচ্ছি। এই পদক্ষেপে পর্যটকরা যেমন ভীতি কাটিয়ে পাহাড়ে বেড়াতে আসবেন। তেমনই পর্যটন ব্যবসারও কোন সমস্যা হবে না।”
[আরও পড়ুন: পুজোয় হাতছানি দিচ্ছে সিকিম, সাত মাস পর পর্যটকদের জন্য খুলে গেল পাহাড়ি রাজ্যের দুয়ার]
গত ছ-সাত বছর ধরে এই পাহাড় পুজোর সময় ‘হাউসফুল’ থাকে। কোন হোটেল, লজ, কটেজ, রিসর্ট সহ হোম স্টেতে একটা জায়গাও ফাঁকা থাকে না। উৎসবের দিনগুলি মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার ব্যবসা হয় এই পাহাড়ে। কোভিড পরিস্থিতিতেও যাতে তার ব্যতিক্রম না হয় সেটাই লক্ষ্য জেলা প্রশাসনের। তাই পাহাড়ের গাইড বেণু সেন বলছিলেন, “অযোধ্যা পাহাড়ের মানুষজনের যা জীবনশৈলী তাতে এই মারণ রোগ এখনও সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি। তবে পর্যটকদের কথা মাথায় রাখতে সাবধানের মার নেই। প্রশাসনের এই উদ্যোগ দারুণ। তাই এই কাজে আমরা সবাই শামিল হয়েছি। পর্যটন ব্যবসার কথা মাথায় রেখেই পুজোয় আমাদের স্লোগান কোভিড (Covid-19) ফ্রি অযোধ্যা পাহাড়।” একইভাবে জেলার বস্ত্র বিপণী এবং শপিং মলের কর্মচারীদেরও অ্যান্টিজেন টেস্ট চলছে।