সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার রাশিয়ার কারাগারে মৃত্যু হয়েছে অ্যালেক্সেই নাভালনির। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। রুশ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে আমেরিকা। পুতিন-বিরোধী নেতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এবার নাভালনির মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আমি আশ্চর্য নই। কিন্তু ক্ষুব্ধ। এই মৃত্যুর জন্য পুতিনই দায়ী।”
এএনআই সূত্রে খবর, শুক্রবার নাভালনির মৃত্যু প্রসঙ্গে হোয়াট হাউস (White house) থেকে বাইডেন বলেন, “নাভালনির মৃত্যুর খবর বিশ্বাস না করার কোনও কারণ নেই আমার কাছে। তিনি সব সময় রাশিয়ার সরকারের জালিয়াতি, দুর্নীতি, অত্যাচার নিয়ে সাহসের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছেন। যার ফলে পুতিন নাভালনিকে বিষ দিয়েছিলেন। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার, সাজা দেওয়া থেকে শুরু করে নির্বাসনে পাঠানো সব কিছু করেছে সেদেশের সরকার। কিন্তু তাতেও দমে যাননি নাভালনি। জেল থেকে তিনি সমস্ত অপরাধের বিরুদ্ধে গলা তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।” ক্ষোভ উগরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “এবার রাশিয়া নিজেদের মতো করে গল্প বানাবে। কিন্তু এটা নিয়ে কোনও দ্বিধা রাখবেন না পুতিনই নাভালনির মৃত্যুর জন্য দায়ী। এই ঘটনা আরও একটা প্রমাণ পুতিনের নৃশংসতার। এর ফল তাঁকে ভুগতে হবেই।”
এদিন রুশ ফেডারেল জেল কর্তৃপক্ষ নাভালনির মৃত্যুর খবর জানায়। যদিও নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন তাঁর প্রেস সচিব কিরা ইয়ারমিশ। নাভালনির আইনজীবী দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে রুশ নেতার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় আমেরিকা। ওয়াশিংটনের মতোই রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ফ্রান্স (France) ও কানাডা-সহ একাধিক দেশ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “আজকের রাশিয়ায়, মুক্তমনাদের গুলাগে পাঠিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।” কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “নাভালনির মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। পুতিন যে একটা দানব তা গোটা বিশ্বকে মনে করিয়ে দিল এই ঘটনা।” দেশ ও নাভালনির পরিবারের প্রতি নৃশংস আচরণ করেছেন পুতিন। এর জন্য তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে। এই বলে রুশ প্রেসিডেন্টের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নাভালনির স্ত্রীও।
বলে রাখা ভালো, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচক হিসাবেই খ্যাত নাভালনি। ক্রেমলিনের অন্দরে চলা দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব তিনি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলার ডাকও দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এহেন পরিস্থিতিতে জালিয়াতি ও দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগে নাভালনিকে দোষী সাব্যস্ত করে রাশিয়ার একটি আদালত। তাঁর সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে ৯ বছর করা হয়। পরে তা আরও বেড়ে একলাফে হয় ১৯ বছর।