শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। আর তার জেরে সম্ভবত খুন হতে হয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীকে। রায়গঞ্জে গৃহবধূ হত্যারহস্যের কার্যত কিনারায় তদন্তকারীরা। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার ভরসন্ধেয় রায়গঞ্জের (Raiganj) রবীন্দ্রপল্লির বাড়ি থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী সুপ্রিয়া দত্তর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়ি সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। সেই ফুটেজকে হাতিয়ার করেই শুরু হয় তদন্ত। তাতে দেখা যায়, এক যুবক সরকারি বাস থেকে নেমে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে ঢোকে। তার পিঠে ছিল ব্যাগ। সূত্রের খবর, ওই যুবককে চিহ্নিত করে মৃতার নাবালক সন্তান। সে জানায়, মাঝেমধ্যে বাড়িতে ওই যুবককে আসতে দেখেছে।
[আরও পড়ুন: অখিল গিরির মন্তব্যে উত্তপ্ত বাঁকুড়া, আদিবাসীদের বিক্ষোভের মুখে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি]
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবক কোচবিহারের চ্যাংরাবান্দার বাসিন্দা। লকডাউনের সময় সুপ্রিয়া দত্তর সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়তা বাড়ে। ফেসবুকে এক যুবকের সঙ্গে পরিচিতি হয়। মাত্র কয়েকদিনে সম্পর্কের রূপ বদলায়। আরও বেশি একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন দু’জনে। সম্প্রতি দু’জনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি শুরু হয়। তাই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন সুপ্রিয়া। সে কারণেই হয়তো গৃহবধূকে খুন হতে হয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
মহিলার ছেলের দাবি, করোনাকাল থেকে মা বদলে গিয়েছিলেন। দিনরাত স্মার্টফোনে ডুবে থাকতেন। মাকে ফিসফিস করে ফোনে কথা বলতেও দেখেছিল সে। মৃতার ছেলের এই বয়ানের পর পরকীয়ার জেরে খুনের সন্দেহ আরও প্রকট হচ্ছে। জলপাইগুড়ির কংগ্রেসপাড়ায় বাপের বাড়ি গৃহবধূর। তাই কোচবিহারের ওই যুবক তাঁর পূর্বপরিচিত কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যদিও মহিলার স্বামীর দাবি, তিনি ওই যুবককে চেনেন না। কোনদিন বাড়িতে আসতেও দেখেননি।
সুপ্রিয়ার প্রতিবেশীরা জানান, ওই মহিলা শুচিবায়ুগ্রস্ত। প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিজের বাড়ির ছাদ থেকে প্রয়োজন কথাবার্তা বলতেন। কিন্তু কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দিতেন না। ইদানীং তাঁদের বাড়ি থেকে প্রায়শয়ই চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যেত। দম্পতির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল বলেই অনুমান প্রতিবেশীদের। অভিযুক্ত আপাতত পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে বলেই জানান পুলিশ সুপার সানা আখতার।